21 C
Dhaka
Wednesday, December 11, 2024

শিলাস্তিকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর নতুন তথ্য

কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার তিন আসামিকে আবারও রিমান্ডে নিয়ে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। এরই মধ্যে ধীরে ধীরে সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর সব লোমহর্ষক তথ্য।

জানা যায়, হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এমপি আনারকে রিসিভের দায়িত্বে ছিলেন শিলাস্তি রহমান।

শুক্রবার (৩১ মে) এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে দেশে গ্রেপ্তার তিন আসামির দ্বিতীয় দফা রিমান্ড আবেদনে এমন তথ্যই উল্লেখ করেন ডিবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান।

এদিন আট দিনের রিমান্ড শেষে সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের আরও আট দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরও পড়ুনঃ  এমপি আনার খুন: মুম্বাই থেকে কসাই এনে মাংস কেটে করা হয়েছে কিমা

এদিকে তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি জানায়,

এমপি আনারকে হত্যা করার আগে কলকাতার সেই ফ্ল্যাটে ওঠেন শিলাস্তি রহমান। হত্যা করার সময় ফ্ল্যাটে ছিলেন শিলাস্তি। তার দায়িত্ব ছিল এমপি আনারকে রিসিভ করা। সেই অনুযায়ী শিলাস্তি রহমান এমপি আনারকে রিসিভ করেন। এরপর থেকে এমপি আনারকে আর পাওয়া যায়নি।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়া জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি নিষিদ্ধঘোষিত পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) শীর্ষস্থানীয় নেতা। তিনি খুলনা, ঝিনাইদহ, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তাদের নিষিদ্ধ দলের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে ভুক্তভোগীর আদর্শের বিরোধ ছিল। এ ছাড়া ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিনের সঙ্গেও আনারের বিরোধ ছিল। এই দুই বিরোধকে কেন্দ্র করে শাহিন ও শিমুল ভূঁইয়া আনারকে হত্যার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেন।

আরও পড়ুনঃ  ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে আটক ছাত্রলীগ নেতা

আর আগেও দুবার আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হন। পরে শাহিন ভারতের কলকাতার অভিজাত নিউটাউন এলাকায় ২৫ এপ্রিল একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। পরিকল্পনায় যুক্ত হন শিলাস্তি রহমান। পরে তাদের সঙ্গে হত্যা পরিকল্পনার মিটিং করে শাহিন গত ১০ মে বাংলাদেশে চলে আসেন।

রিমান্ড আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, পরবর্তী সময়ে শিমুল ভূঁইয়া ও শাহিনের নির্দেশে অন্য আসামিরা ভুক্তভোগীকে কৌশলে ব্যবসার কথা বলে কলকাতার ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। পরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শিমুল ভূঁইয়া অন্য আসামিদের সহায়তায় আনারকে হত্যা করেন। হত্যার পর তার মরদেহের হাড় মাংস আলাদা করে, মাংসের ছোট ছোট টুকরো করে ফ্ল্যাটের টয়লেটের কমোডে ফেলে ফ্ল্যাশ করা হয়। এ ছাড়া হাড়সহ শরীরের অন্যান্য অংশ ট্রলিব্যাগে করে কলকাতার নিউটাউন থেকে দূরে একটি খালে ফেলে দেয়।

আরও পড়ুনঃ  ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে চাকরি ছাড়লেন ওসি

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, শাহিন ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য কলকাতার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি পুলিশকে জানানো হয়। পরে কলকাতার সিআইডি পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে জমা হওয়া মানুষের মাংসসদৃশ কিছু উদ্ধার করে, যা ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আনোয়ারুল আজিম আনারের কি না, নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে কলকাতার সিআইডি পুলিশের মাধ্যমে মৌখিকভাবে জানানো হয়। এই আলামত উদ্ধারের সময় ডিবি পুলিশের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল।

আবেদনে আরও বলা হয়, গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়া আরও জানান, আনারকে হত্যা করা ও লাশ থেকে হাড় মাংস আলাদা করার কাজে আসামি ফয়সাল, মোস্তাফিজ ও জিহাদ সরাসরি জড়িত ছিলেন। হাড় ও শরীরের অন্যান্য অংশ দূরে ফেলে দেওয়ার কাজে সিয়ামসহ অজ্ঞাতনামা ২-১ জন সরাসরি জড়িত ছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ