সম্প্রতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ফুয়াদ হোসেন শাহাদাতের সঙ্গে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এক নেত্রীর বিয়ের স্বীকৃতি ও স্ত্রীর মর্যাদা দাবির বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এরই মধ্যে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করার কথা এই নেতা নিজেই সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন। এমতাবস্থায় তাকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
সোমবার (৩ জুন) সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অব্যাহতির বিষয়ে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, ফুয়াদ হোসেন শাহাদাতকে (সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) তার স্বীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
এছাড়া, অব্যাহতির বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের পরই ফুয়াদ হোসেন শাহাদাতকে তার ফেসবুক টাইমলাইনে নিজের একটি বিয়ের ছবির ক্যাপশনে ‘গট ম্যারিড’ লিখে স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায়।
কী কারণে সংগঠন থেকে ফুয়াদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে বক্তব্য জানতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থকে একাধিকবার কল দিয়ে ও বার্তা পাঠিয়েও পাওয়া যায়নি। তবে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা কালবেলাকে বলেন, ফুয়াদ হোসেন শাহাদাতের বিয়ে সম্পর্কিত বিষয়াবলি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকতে পারে।
এর আগে, গত ২৪ মে ফুয়াদ হোসেন শাহাদাতের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এক নেত্রী এবং তিনি প্রতিকার চেয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে ২০১৬ সালে বিয়ে করা এবং সব তথ্য ফুয়াদ নিজের কাছে আটকে রেখে পরে তা অস্বীকার করার বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেন। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সেই নেত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে বিষয়গুলো জানালে তিনি মীমাংসার দায়িত্ব দেন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য ৫ এপ্রিল সময় নির্ধারণ করা হলেও এর দুদিন আগে পারিবারিকভাবে সমাধানের কথা বলে ফুয়াদ তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে যান। ভুক্তভোগী তরুণীর দাবি, বাসায় যাওয়ার পর সমাধানের পরিবর্তে ফুয়াদ তাকে এলোপাতাড়ি লাথি মারে এবং গুরুতর জখম করে।
গত বছরের ৩ নভেম্বর হাজারীবাগ থানায় ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। এতে ফুয়াদ ওই নেত্রীর সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে অভিযোগ করেন, বন্ধুত্বের সুবাদে নিজের মোবাইল ফোনে ছবি ধারণ করে পরবর্তী সময়ে ওই নেত্রী তার বাসা ভাড়াসহ বিভিন্ন খরচ দিতে তাকে বাধ্য করে। টাকা না দিলে ফেসবুকে ছবি বিভিন্নভাবে পোস্ট করে সম্মানহানি করার হুমকি দেয়। সর্বশেষ গত এপ্রিলেও এআই দিয়ে অপ্রীতিকর ছবি-ভিডিও বানিয়ে তা ছড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কায় এ জিডি করেন ফুয়াদ।