21 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

ভারতে নিজেকে শাহীনের স্ত্রী পরিচয় দেন শিলাস্তি

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে কলকাতার উপকণ্ঠে নিউ টাউনে যে ফ্লাটে হত্যা করা হয় সেখানে মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহিনের স্ত্রী হিসেবে শিলাস্তি রহমান থানায় ফরম পূরণ করেন।

সোমবার রিমান্ড চলাকালীন তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তিনি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে শিলাস্তি বিচারককে জানান, ভারতের থানায় আখতারুজ্জামান শাহিনের স্ত্রী হিসাবে ফরম পুরণ করা হয়। পরে সেই ফরম দেখিয়ে সঞ্জীভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়া হয়।

সঞ্জীভা গার্ডেনসের ওই ফ্ল্যাটটির মালিক সন্দীপ রায়। তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরে কাজ করেন। তার কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী শাহীন।

আরও পড়ুনঃ  ১৪ সেপ্টেম্বর স্মরণসভা হচ্ছে না, ৫ কোটি টাকা বাজেট নিয়ে যা বললেন তথ্য উপদেষ্টা

গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

মামলার অভিযোগে ডরিন উল্লেখ করেছেন, মানিক মিয়া এভিনিউয়ের বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা আনোয়ারুল আজিম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ১১ মে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই।

১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। এতে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউটাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নাই। আমি পরে ফোন দেব।’ এছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। ক্ষুদে বার্তাগুলো আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  সৌদি আরবে ১৭ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজ করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে ভারতীয় বরাহনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও আমরা খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে বাবাকে অপহরণ করেছে।

গত ১২ মে ঝিনাইদহর কালীগঞ্জ থেকে কলকাতায় যাওয়ার পরেরদিন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার।

এরপর ২২ মে সকালের দিকে তার খুনের খবর প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ বলছে, কলকাতার উপকণ্ঠে নিউটাউনের অভিজাত আবাসন সঞ্জীভা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করা হয়।

খুনের আলামত মুছে ফেলতে দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। এরপর সুটকেস ও পলিথিনে ভরে ফেলে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়।

আরও পড়ুনঃ  আপনি যান গে, এই ক্যাম্পাস আমাদের!

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্যকে হত্যার পর মরদেহ ফেলার কাজে অংশ নেয়া মুম্বাই থেকে ভাড়া করে আনা কসাই জিহাদকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ।

আর ঢাকায় ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হন হত্যাকাণ্ডের মূল সংঘটক চরমপন্থি নেতা আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজি। নেপালে গ্রেপ্তার হয়েছে সিয়াম হোসেন নামে আরেক অভিযুক্ত। সিয়ামও মরদেহ ফেলায় অংশ নিয়েছিল বলে সন্দেহ।

‘গার্লফ্রেন্ড’ শিলাস্তি ফেরার পর ঢাকা ছাড়েন শাহিন‘গার্লফ্রেন্ড’ শিলাস্তি ফেরার পর ঢাকা ছাড়েন শাহিন
গত ১৩ মে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনে শেষবার দেখা গিয়েছিলো এমপি আনারকে। মনে করা হচ্ছে ওই দিনই তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে আততায়ীরা। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন এমপি আনারের বাল্যবন্ধু শাহীন। ইতোমধ্যেই গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। নেপাল হয়ে দুবাই, তারপরে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যেতে পারেন এই শাহীন।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ