ইসরায়েলের জরুরি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন বেনি গানৎস। রোববার (৯ জুন) তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। গাজা যুদ্ধের মধ্যে তার এই পদত্যাগকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর আলজাজিরা ও সিএনএনের।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বেনি গানৎস বলেন, নেতানিয়াহু আমাদের প্রকৃত বিজয়ের দিকে অগ্রসর হতে বাধা দিচ্ছেন। এই কারণেই আমরা আজ জরুরি সরকার ছেড়ে যাচ্ছি।
ওই সময় আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এমন একটি নির্বাচন হওয়া উচিত যা এমন একটি সরকার গঠন করবে, যে সরকার জনগণের আস্থা অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। আমি নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানাই, সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করুন।
গাজা যুদ্ধের তদারকি করার জন্য গত বছর জরুরি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন নেতানিয়াহু। তিন সদস্যের এই মন্ত্রিসভায় বেনি গানৎস অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে ইসরায়েলি রাজনীতিতে তাকে নেতানিয়াহুর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হয়।
তবে গত মাসে এই জরুরি সরকার ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বেনি গানৎস। তখন তিনি বলেছিলেন, নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধ পরবর্তী পরিকল্পনা প্রকাশ করতে ব্যর্থ হলে তিনি তার সরকার ছেড়ে যাবেন। গত শনিবারই গানৎস পদত্যাগ করবেন বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে ওইদিন ইসরায়েলি বাহিনী এক অভিযানে গাজায় হামাসের হাতে বন্দী চার জিম্মিকে উদ্ধার করলে পদত্যাগের ঘোষণা স্থগিত করেন তিনি। ওইদিন বন্দী উদ্ধারের নামে ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে তাতে ২৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এদিকে সিএনএনের খবর অনুযায়ী, বেনি গানৎস পদত্যাগ করলেও তাৎক্ষণিক কোনো বিপদে পড়ছেন না নেতানিয়াহু। কেননা গানৎসের দল নেতানিয়াহুর জোট সরকারের শরিক নয়। ফলে তিনি পদত্যাগ করলেও ইসরায়েলি সংসদ নেসেটে নেতানিয়াহুর সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় থাকবে। বর্তমানে নেসেটের ১২০ আসনের মধ্যে ৬৪টি তার জোট সরকারের দখলে রয়েছে।
তবে গানৎস সরকার ছাড়ায় ইসরায়েলি জরুরি মন্ত্রিসভায় এখন নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি ব্যতীত অন্য কোনো দলের প্রতিনিধি রইলো না। এ ছাড়া গাজা যুদ্ধের অবসান এবং ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্র এবং জিম্মি পরিবার এই চাপ সৃষ্টি করছে বলে জানা গেছে।