ইসরায়েলকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির এক নেতা এ হুমকি দেন। বলেন, ইসরায়েল যেন কান্নার প্রস্ততি নেয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে শিগগির ভয়ংকরভাবে জবাব দেওয়া হবে।
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (১১ জুন) ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। তালেব সামি আবদুল্লাহ নামে ৫৫ বছর বয়সী এ নেতা ফিল্ড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি গোষ্ঠীটির সামরিক নেতৃত্ব ও পরিকল্পনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন।
এ ঘটনায় বেশ ক্ষিপ্ত হয় হিজবুল্লাহ। জবাবে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একইদিনে ১৭০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে তারা। বুধবার (১২ জুন) সকালে দফায় দফায় এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। হিজবুল্লাহর এসব ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, গত ৮ মাস ধরে চলা এ যুদ্ধে এটি ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হিজবুল্লাহর চালানো অন্যতম বড় রকেট হামলা।
দেখতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী, আসলে তারা ইসরায়েলি সেনা
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, লেবানিজ গোষ্ঠীটির এবারের হামলায় লক্ষ্য করা হয়েছে তাইবেরিয়াসকে। চলমান যুদ্ধে এর আগে এই অঞ্চলে কোনো রকেট ছোড়েনি হিজবুল্লাহ। রকেট হামলায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
হিজবুল্লাহর রকেট হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। তারা জানিয়েছে, লেবানন থেকে অন্তত ৯০টি রকেট উত্তর ইসরায়েল প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে কিছু রকেট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ধ্বংস করা হয়েছে। আর কিছু রকেট কয়েক জায়গায় আঘাত হেনেছে।
লেবাননের আল-মায়াদিন টেলিভিশন চ্যানেল জানিয়েছে, গোলান মালভূমির আপার গ্যালিলিতে কয়েক ডজন বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এর মধ্যে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র রামিম ক্লিফ, আল মানারা এবং আরও কয়েকটি অবৈধ ইহুদি বসতিতে আঘাত হানে।
রকেট পড়ে বিভিন্ন স্থানে আগুন লেগেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনবাহিনী। তবে তারা দাবি করেছে, এই হামলায় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
প্রাথমিক অবস্থায় ইসরায়েল একশরও বেশি রকেট ছোড়ার কথা বলেছিল। এর কিছুক্ষণ পর উত্তর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে আরও ৭০টি রকেট ছোড়ে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল দাবি করেছে, এসব রকেট খোলা জায়গায় পড়েছে। আর অল্পসংখ্যক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে তালেব সামি আবদুল্লাহকে তাদের নীতি অনুযায়ী সম্মান জানিয়ে জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। সামির কফিন হিজবুল্লাহর পতাকায় মুড়িয়ে জানাজাস্থলে আনা হয়। সেখানে উপস্থিতরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন।
জানাজার আনুষ্ঠানিকতায় ভাষণ দেন গোষ্ঠীটির কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রধান সাইয়েদ হাশেম সাফি আল-দীন। তিনি বলেন, তালেব সামি আবদুল্লাহর শাহাদাতে তারা ভীত নন। এর জবাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা আরও কঠোরভাবে জোরদার করা হবে। নতুন করে অভিযান চালানো হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুরা যেন হিজবুল্লাহর অপেক্ষায় থাকে। কান্না ও আহাজারির জন্য ইসরায়েলের প্রস্তুত হওয়া উচিত।