সারা দেশে আজ মুসলমানরা আলাদা আলাদ জামাতে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন। রাজধানীতে হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। আজ সোমবার (১৭ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদের এই জামাত হয়। এছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বড় বড় ঈদগাহ ও মসজিদেও একাধিক ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী প্রতিটি ঈদগাহে নামাজের আগে খতিব ও ইমামগণ পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে বয়ান করেন। তাদের বয়ানে মুসলিম বিশ্বে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং রোহিঙ্গা ও ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর বর্বর হামলার প্রসঙ্গ উঠে আসে। দেশে দুর্নীতি ও অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার জন্য ইসলামী বিধি-বিধানের অনুপস্থিতির কথাও উল্লেখ করেন তারা।
রাজধানীর মাতুয়াইল কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব মাওলানা বশির আহমেদ ঈদের খুতবার বয়ানে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘পুলিশের একজন সাবেক মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগরের আরেকজন সাবেক কমিশনারের দুর্নীতির যে ফিরিস্তি দেখলাম- তা রিতিমতো পুকুর চুরি নয়, এটি মহাসাগর ডাকাতি। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা দেশের সম্পদ চুরি করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। দেশের লাখ কোটি টাকার সম্পদ লুট করে এরা বিদেশে পাচার করেছে বলেও খবরে পড়েছি। এরা নব্য রাজাকার।’
মাওলানা বশির ঈদের খুতবার বয়ানে আরও বলেন, ‘যেসব কর্মকর্তা পদ ও পদবীকে অবৈধভাবে অর্থ-সম্পদ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন, তাদের হাতে দেশ, দেশের সম্পদ ও জনগণের জানমাল কখনোই নিরাপদ থাকতে পারে না। এরা লাইসেন্সধারী শীর্ষ সন্ত্রাসী। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে সমাজ ও জনগণের মধ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। একজন সীমাহীন অপরাধ ও দুর্নীতি করে একজন আইপিজি যদি পার পেয়ে যায়, তাহলে ছোটখাটো কর্মকর্তাদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়বে।
সবাইকে দুর্নীতি ও অপরাধ থেকে নিজেকে ও পরিবারের সবাইকে হেফাজতে রাখার আহ্বান জানিয়ে এ খতিব মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘ব্যাংক থেকে একজন কৃষক সামান্য কৃষি নিয়ে খেলাপি হয়ে গেলে তাকে কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে হাজতে নেওয়ার ছবি পত্রপত্রিকায় দেখি। অপরদিকে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করার সংবাদও আমরা দেখছি। এসব বৈষম্য রেখে কল্যাণ রাষ্ট্র নির্মাণ করা যায় না।’
নামাজ আদায় শেষে নিজেদের অপরাধের জন্য মহান আল্লাহর দরবারের ক্ষমা প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা। মুনাজাতে ফিলিস্তিনের মুসলমান ও মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নির্যাতনে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে দোয়া করা হয়।