বুধবার রাত প্রায় পৌনে ১০টা। ওই সময় মহাসড়কের ওপর পড়ে আছে নারীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন লাশ। পাশেই ভাঙা টিফিন ক্যারিয়ারে রান্না করা মাংস ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে, পড়ে আছে জুতা ও ভ্যানিটি ব্যাগ। দুর্ঘটনার শিকার মোটরসাইকেলও পড়ে আছে এক পাশে। আরেক পাশে উল্টে গেছে পণ্যবাহী ট্রাক। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। উৎসুক মানুষের ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসেন তানভীর আহম্মেদ নামে এক তরুণ। খণ্ডিত লাশ দেখে শিউরে ওঠেন। দেহের ওপরের অংশ দেখেই চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘এটা তো আমার মা, বাবা কই?’
ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বন্দরে। বুধবার রাতে ট্রাকচাপায় নিহত হন তানভীর আহম্মেদের মা মোটরসাইকেল আরোহী মিতু বেগম। তিনি উপজেলার ডমনপুকুর নতুনপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবদুল মজিদের স্ত্রী। ওই ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক আবদুল মজিদ আহত হন। তাদের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী উপজেলায়। দুর্ঘটনার পর আমবাহী ট্রাকের চালক পালিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাতে স্ত্রী মিতু বেগমকে নিয়ে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বাসস্ট্যান্ডের সেনানিবাস এমপি চেকপোস্টের সামনে মোটরসাইকেলে সড়ক পার হচ্ছিলেন আবদুল মজিদ। তখন পেছন থেকে আসা ঢাকামুখী আমবোঝাই ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে বিকট শব্দে ট্রাকটিও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে উল্টে যায়। এ সময় মহাসড়কেই ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয় এক নারীর দেহ।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আহত একজনকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় হাসপাতালে। ওই সময় উৎসুক মানুষের ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসেন পথচারী তরুণ তানভীর আহম্মেদ। খণ্ডিত লাশ দেখে শিউরে উঠেন তিনি। একপর্যায়ে দেহের ওপরের অংশ দেখেই চিৎকার দিয়ে তানভীর আহম্মেদ বলেন, ‘এটা তো আমার মা, বাবা কই?’। এরপর জানা যায় নিহতের নাম-পরিচয়।
হাইওয়ে পুলিশের বগুড়ার শেরপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ সৈয়দ আবুল হাশেম বলেন, ট্রাকচাপায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন মিতু বেগম। আহত মোটরসাইকেলের চালক আবদুল মজিদকে বগুড়ার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।