ডাইনিংয়ে খাওয়ার সময় সালাম না দেওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান। সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালাগালও করেন। এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে অধ্যক্ষ বরাবর আবেদন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরে মেডিকেল হোস্টেলে অরাজকতা সৃষ্টি এবং হত্যার হুমকির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগী জাওয়াদ হাসান খান ওই মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর ইন্টার্ন চিকিৎসক। জানা যায়, গত ২৯ জুন দুপুরে খাবার খাওয়ার জন্য হোস্টেলের ডাইনিংয়ে যান জাওয়াদ।
সে সময় সেখানে মিজানুরও ছিলেন। তাড়া থাকায় মিজানুরকে খেয়াল করেননি জাওয়াদ। সালাম না দিয়ে খেতে বসায় জাওয়াদকে ডেকে নেন ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর। সালাম না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে জাওয়াদ জানান, তিনি খেয়াল করেননি এবং সেজন্য ক্ষমাও প্রার্থনা করেন। কিন্তু তারপরও জাওয়াদকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে মারতে উদ্যত হন মিজানুর। ডাইনিংয়ে সবার সামনে হত্যার হুমকিও দেন।
জাওয়াদ কালবেলাকে জানান, তিনি মেডিকেল কলেজের সভাপতি গ্রুপের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যান। মিজানুরের রাজনীতি না করলেও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সম্মান করেন। ঘটনার দিন সকালেও তাকে সালাম দিয়েছেন। কিন্তু দুপুর বেলায় ডাইনিংয়ে তার সঙ্গে ওই আচরণ করেন। তিনি আরও বলেন, প্রাণনাশের শঙ্কায় অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি এবং হোস্টেল সুপারকেও জানিয়েছি।
মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, মিজানুরের এমন আচরণের ভুক্তভোগী আরও অনেকেই। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায় সময়ই হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। সাধারণ শিক্ষার্থী তো বটেই, যারা রাজনীতি করে তারাও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে থাকে। মিজানুরের বাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈর বলে স্থানীয় রাজনীতির প্রভাব দেখায়। এলাকার সবাই তার পরিচিত, তার ডাকে হাজার হাজার লোক আসবে—এমন কথা বলে হুমকি দেন।
যদিও ঘটনাটিকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে বলে দাবি ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমানের। তিনি বলেন, এমন কোনো হুমকি দেইনি। তার সঙ্গে ওইদিন কিছু বিষয় নিয়ে রাগারাগি হয়েছে। সে ছাত্রলীগেরই একজন কর্মী। মাঝে মধ্যে এমন কিছু হয়ে যায়। এর আগেও কিছু বেয়াদবির ঘটনা ঘটেছিল। ওই বিষয়েই তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। পরে সে দুঃখ প্রকাশ করে চলে যায়। এরপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। যেহেতু এ ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে, তাই সত্য ঘটনা প্রকাশ পাবে।
এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার ডক্টর সবুজ খান বলেন, ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিক অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটির পক্ষ থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।