ভারতে গার্লস স্কুলের দুই মিনিট ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ। নাটকীয় ওই ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে উত্তর প্রদেশের প্রজ্ঞারাজে অবস্থিত বিশপ জনসন গার্লস স্কুল থেকে।
এর শুরুতেই এক বিশৃংখল পরিস্থিতি দেখা যায়। স্কুলটির একদল স্টাফ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রবেশ করে প্রিন্সিপ্যালের অফিসকক্ষে। তাকে অবিলম্বে চেয়ার ফাঁকা করে দেয়ার দাবি করেন তারা। কিন্তু তাদেরকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন ওই প্রিন্সিপাল। এক পর্যায়ে ওই স্টাফরা প্রিন্সিপালকে জোর করে সরিয়ে দেয়। তিনি চেয়ারে থাকা অবস্থায় চেয়ার ধরে তাকে টেনে সরিয়ে দেয় প্রিন্সিপালের বসার স্থান থেকে। এ সময় তার মোবাইল ফোনও নিয়ে নেয় তারা।
সঙ্গে সঙ্গে তারা নতুন একজন প্রিন্সিপালকে সেই স্থানে আসনে বসিয়ে দেয়। এ সময় উপস্থিত ব্যক্তিরা হাততালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের এক দুর্নীতির অভিযোগে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে, বহু কোটি রুপির দুর্নীতিতে প্রশ্ন ফাঁস করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। লক্ষেèৗয়ের ডিওসেসে হিসেবে প্রতিনিধিত্বকারী বিশপ মাউরিস ইডগার ড্যান অভিযোগ করেন যে, গত ১১ই ফেব্রুয়ারি ইউপিপিএসসি রিভিউ অফিসার এসিস্ট্যান্ট রিভিউ অফিসার পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বহু কোটি রুপির বিনিময়ে। এর সঙ্গে এই স্কুলটি জড়িত বলে অভিযোগ আছে।
বিশপ ড্যান বলেন, এ অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। তার মধ্যে অন্যতম স্কুলের একজন স্টাফ সদস্য বিনীত যশওয়ান্ত। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে প্রিন্সিপাল পারুল সলোমনের জড়িত থাকার বিষয়টিও সামনে এসেছে। বিশপ ড্যান বলেন, এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার পরিণতিতে প্রিন্সিপাল মিস সলোমনকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। গত ১১ই ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শুরুর আগে প্রজ্ঞারাজে ওই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়। এ জন্য উত্তর প্রদেশের এসটিএফ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তার মধ্যে অন্যতম বিনীত যশওয়ান্ত। তিনি বিশপ জনসন গার্লস স্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্র প্রশাসক।
তাদের নেটওয়ার্ক স্থানীয় সময় পরীক্ষার দিন সকাল সাড়ে ছয়টায় প্রশ্নপত্রের ছবি মোবাইলে তুলে তা বাইরে পাঠিয়ে দেয়। এ অভিযোগে ওই স্কুলের চেয়ারম্যান ও অন্যরা প্রিন্সিপালের সঙ্গে ওই আচরণ করেন। এ ঘটনার মোট তিনটি ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে। তা মাতিয়ে রেখেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ওদিকে বিশপ ড্যান স্কুলটির প্রিন্সিপাল সলোমনকে বরখাস্ত করে ওই পদে নিয়োগ দিয়েছেন শারলে ম্যাসি নামে একজনকে। ফলে ঘটনার দিন যখন মিস ম্যাসে স্কুলে উপস্থিত হন, তখন প্রিন্সিপাল সলোমন নিজেকে তার অফিসকক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে শক্তি প্রয়োগ করে তা খোলা হয়। কিছু শিক্ষক এ সময় মিস সলোমনকে তার চেয়ার থেকে জোর করে সরিয়ে দেন। এর ফলে মিস সলোমন তাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির একটি মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন বিশপ ড্যান। তিনি আরও দাবি করেন, মিস সলোমনের দাবির পরেও ভিডিও এবং সিসিটিভি ফুটেজেই প্রমাণ মিলছে তার শরীরের সঙ্গে কারো কোন সংশ্লেষ ছিল না।