দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা সমালোচনা ও বিরোধীতা চলেছে। সম্প্রতি কোটাবিরোধী আন্দোলন বেশ ফুঁসে উঠেছে। আর চলমান এই আন্দেোলনকে সমর্থন জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন নির্মাণের মাধ্যমে তারকা খ্যাতি লাভ করা পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
এ পরিচালক ফেসবুক পোস্টে আন্দোলনে অংশ নেয়া সবাইকে লাল সালাম জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই পোস্টটি কিছুক্ষণ পরই আবার ফেসবুক থেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। কেন এবং কী কারণে পোস্ট ডিলিট করেছেন, তা অবশ্য এখনো জানাননি। ধারণা করা হচ্ছে―বিতর্ক এড়ানোর জন্যই পোস্টটি সরিয়ে নিয়েছেন নির্মাতা ফারুকী।
‘ব্যাচেলর’ সিনেমা খ্যাত পরিচালক পোস্টটি ফেসবুক থেকে ডিলিট করলেও সেটির স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে। তাতে দেখা যায় তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘ঢালাও কোটার নামে মেধাহীন রাষ্ট্রব্যবস্থাকে উৎসাহ দেয়া বন্ধ হোক। সমাজের অনগ্রসরদের জন্য ১০ ভাগ কোটা থাকতে পারে। তার জন্য ৫৬ ভাগ?’
তিনি আরও লিখেছিলেন, ‘এই আন্দোলনে যারা আছ, তাদের সবার জন্য লাল সালাম। নিজের সুস্থতার জন্য অনলাইনে খুব বেশি থাকি না। সব উত্তেজনা থেকে দূরে থাকার চেষ্টায় আছি। কিন্তু এই কথাগুলা না বললে ইতিহাসের কাছে অপরাধী থেকে যাব। আমার মেয়েরা যখন বড় হবে বলবে, বাবা যখন এইরকম একটা ব্যবস্থা করা হয়, তখন তোমরা কী করছিলে?’
এদিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে এই পোস্ট দেয়া এবং তা কিছুক্ষণ পর সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে জানতে নির্মাতা ফারুকীকে একাধিকবার ফোন করা হয় চ্যানেল 24 অনলাইন থেকে। কিন্তু তার সাড়া না পাওয়ায় কোনো মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। যা পরবর্তীতে সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। ওই বছরের ৪ অক্টোবর আন্দোলনের মুখে সব ধরনের কোটা বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হয়। এতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটাপ্রথা বন্ধ হয়।
পরের বছর আবার সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন পরিপত্রের সেই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এর ফলে বহাল থেকে যায় কোটাপদ্ধতি। আর এতে ক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা।
এ অবস্থায় কোটাপ্রথা বাতিলের দাবিতে ফের আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ঈদুল আজহার কয়েকদিন আগে বিক্ষোভের পর দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারকে ৩০ জুন পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়া হয়। এতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড় না পাওয়ায় গত ১ জুলাই থেকে ফের আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।