প্রশ্নফাঁসের প্রতিবাদে বই পোড়ালেন রাবি শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) নেওয়া বিসিএসের ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বই পুড়িয়ে প্রতিবাদ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী। রোববার (৭ জুলাই) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ৪১৩নং রুমের সামনে বই পোড়ান তারা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান আকন্দ বলেন, বিসিএস পরীক্ষায় ৫৬ শতাংশ, রেলওয়েতে ৮৫ শতাংশ, প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ১১৬ শতাংশ কোটা রয়েছে। এভাবে সরকারি চাকরিতে কোটা থাকা বৈষম্যমূলক। ২০-২৫ বছর পড়াশোনা করে যদি চাকরি না পাই, তাহলে তো পড়াশোনা করে লাভ নাই। এজন্য বই পুড়িয়ে দিচ্ছি। বাবা-মা অভাবনীয় কষ্ট করে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। যদি চাকরি না পাই তাহলে তাদের রক্ত ও ঘামের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানে সরকারি চাকরি লাভের ক্ষেত্রে সুযোগের সমতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে এভাবে কোটা থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংবিধানে রক্ষিত মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। এটা হতে পারে না। আমরা কোটা সংস্কার চাই। শিক্ষার্থীদের ভরসার জায়গা বিপিএসসির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও যদি ফাঁস হয় তাহলে মেধাবীরা কোথায় যাবে? আমাদের তো লেখাপড়া করে কোনো লাভ নেই। তাই বই পুড়িয়ে দিচ্ছি।
চাকরিপ্রত্যাশী আরেক শিক্ষার্থী হৃদয় হোসেন বলেন, পড়াশোনা করে যদি চাকরি না পাই বা বিশাল বৈষম্যের শিকার হই, তাহলে পড়াশোনা করব না। সব বই পুড়িয়ে দেব। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই হতে পারে না। মেধাভিত্তিক দুর্নীতিমুক্ত সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠুক, সেটাই চাই
উল্লেখ্য, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল-২৪ এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রায় এক যুগ ধরে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে আসছে। এমনকি সবশেষ ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হয়েছে। সবশেষ গত শুক্রবার (৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের ৫১৬টি পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হয়। ৩৩তম বিসিএস থেকে ৪৬তম বিসিএস পর্যন্ত প্রায় ৩০টি ক্যাডার-ননক্যাডার পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। আর এসব প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত পিএসসির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।