21 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

দেশে কোকা-কোলার বিনিয়োগ স্থগিত

সম্প্রতি কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজ লিমিটেড (সিসিবিবি) ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে অধিগ্রহণ করে তুর্কি কোম্পানি কোকা-কোলা আইসেসেক (সিসিআই)। শিল্পের বিকাশের জন্য পরবর্তী সময়ে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বর্ধিত করহার এবং শুল্ক বিবেচনা করে আগের বিনিয়োগ পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছে সিসিআই। পাশাপাশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভবিষ্যতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়েও।

কোমল পানীয়র ওপর বিদ্যমান শুল্ক-কর কমাতে ও অযৌক্তিক হারে পণ্যটির ওপর রাজস্ব না বসাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। গত ২ জুলাই বিডার পরিচালক মু. জসিম উদ্দিনের সই করা চিঠিটি এনবিআর চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, কোকা-কোলার পাশাপাশি স্প্রাইট, ফান্টা এবং কিনলে উৎপাদন ও বাজারজাত করছে প্রতিষ্ঠানটি। এ খাতে বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ হাজার ৭২ কোটি টাকা ও ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে আনুমানিক ১ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। সবশেষ (২০২৩-২৪) অর্থবছরে পানীয় খাত থেকে রাজস্ব আদায় কমেছে। আগের বছরের তুলনায় যা প্রায় ২০ দশমিক ০১ শতাংশ কম।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশিদের কিডনি অপসারণ, দিল্লিতে চিকিৎসক গ্রেফতার

এতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পানীয় বিক্রির ওপর ৩ শতাংশ ন্যূনতম কর (যা আগে ছিল শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ) চালুর সঙ্গে বিদ্যমান মোট করহার বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ। ক্রমবর্ধমান কর বাড়ার কারণে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম বেড়েছে। এতে পণ্যের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। সরকারের রাজস্ব সংগ্রহকেও যা উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে।

চিঠিতে বিডা জানায়, বর্তমান নিম্নমুখী ব্যবসায়িক অবস্থা বিবেচনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আগে আরোপিত ন্যূনতম কর ৩ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ না কমিয়ে বরং সম্পূরক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ শতাংশ। এ করহার বাস্তবায়িত হলে স্থানীয় পর্যায়ে মোট করহার হবে প্রায় ৫৩ শতাংশ। অন্য শিল্পের তুলনায় এ করহার সর্বোচ্চ। বাজেটে প্রস্তাবিত বর্ধিত করহার এবং শুল্ক বিবেচনা করে আগের বিনিয়োগ পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছে সিসিআই। পাশাপাশি ভবিষ্যতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

আরও পড়ুনঃ  ভালোবাসার মানুষকে নিজের করতে আমেরিকা থেকে ফেনীতে এলেন সেন্ডোরা

কোমল পানীয় খাতে বিনিয়োগ সংরক্ষণের জন্য আগামী তিন বছরের জন্য প্রত্যাশিত নতুন কর কাঠামো অপরিবর্তিত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে চিঠিতে। প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে চিঠিতে বলা হয়, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সরকার সর্বোচ্চ প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ন্যূনতম কর এবং সম্পূরক শুল্ক যৌক্তিক হারে নির্ধারণের ওপর আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানটির (সিসিআই) প্রস্তাবিত ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ নির্ভর করছে।

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ ও অব্যাহত রাখতে কোকা-কোলা আইসেসেকের প্রস্তাব অনুযায়ী ন্যূনতম কর এবং সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে সুবিবেচনা করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঃ  হেফাজত নেতা মামুনুল হক ডিবিতে

চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০৪১ অনুযায়ী একটি উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যে অব্যাহতভাবে দুই অঙ্কের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধ অর্জনের বিকল্প নেই। এ ছাড়াও মসৃণভাবে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে এবং আগামী ১৮ বছরের মধ্যে উন্নত দেশের তালিকায় স্থান পেতে বাংলাদেশের রফতানি ও বিনিয়োগ বহুমুখী করতে বর্তমান সরকার বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের অন্যতম পূর্বশর্ত বেসরকারি বহুমুখী খাতে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ জিডিপির ৩ শতাংশে উন্নীত করা।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কার্বোনেটেড বেভারেজের (কোমল পানীয়) ওপর সম্পূরক শুল্ক ও কর বাড়িয়েছে সরকার। কোমল পানীয় ও আইসক্রিম থেকে চলতি অর্থবছরে বাড়তি ২৫০ কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ