ভারতে এক আইআরএস (ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস) অফিসারের লিঙ্গ ও নাম পরিবর্তনের আবেদন মঞ্জুর করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। তেলাঙ্গানার হায়দরাবাদে সেন্ট্রাল এক্সাইজ কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স অ্যাপ্লিলেট ট্রাইব্যুনালের চিফ কমিশনারের অফিসে জয়েন্ট কমিশনার হিসেবে কর্মরত আছেন ওই অফিসার।
নারী রাজস্ব কর্মকর্তা এম অনুসূয়া সরকারি চাকরিতে তার নাম ও লিঙ্গপরিচয় পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছিলেন। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) তার সেই আবেদন মঞ্জুর করে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে এখন থেকে তিনি পরিচিত হবেন ‘এম অনুকাথির সূর্য’ নামে।
ভারতের সিভিল সার্ভিসেস ইতিহাসে প্রথমবার এরকম ঘটনা ঘটল। সরকারি নথিতে তার লিঙ্গপরিচয় হবে-পুরুষ।
দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,
বর্তমানে হায়দরাবাদে সেন্ট্রাল এক্সাইজ কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স অ্যাপ্লিলেট ট্রাইব্যুনালের চিফ কমিশনারের অফিসে জয়েন্ট কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত আছেন এম অনুসূয়া। তিনি নিজের নাম পাল্টে এম অনুসূয়া থেকে এম অনুকাথির সূর্য করার আবেদন জানান। একইভাবে লিঙ্গ পাল্টে নারী থেকে পুরুষ করার আবাদেন জানান। তার আবেদন গৃহীত হয়েছে। তাই সমস্ত সরকারি রেকর্ডে ওই অফিসারকে এখন থেকে এম অনুকাথির সূর্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
ওই অফিসারের লিঙ্কডইনের প্রোফাইল অনুযায়ী, ২০১০ সালে চেন্নাইয়ের মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন থেকে স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনা সম্পন্ন করেন।
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে আইআরএস অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। প্রথমে চেন্নাইয়ে অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ২০১৮ সালের এপ্রিলে ডেপুটি কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি পান। পোস্টিং ছিল চেন্নাইয়ে। পরে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি জয়েন্ট কমিশনার হিসেবে হায়দারাবাদে কাজ শুরু করেন।
মানুষের লৈঙ্গিক পরিচয়ের বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে হায়দরাবাদ বেশকিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে। ২০১৫ সালের জুনে হায়দরাবাদের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব লিগাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ ইউনিভার্সিটির আইনের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান, স্নাতক সনদে শিক্ষার্থীর লিঙ্গপরিচয় রাখা যাবে না।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের এই আবেদন মঞ্জুর করে। শিক্ষার্থীরা জানান, ভারতে লৈঙ্গিক বিভাজন দূর করার পথে এটা এক ধাপ অগ্রগতি। গত বছর হায়দরাবাদের ইএসআই হাসপাতালে জরুরি মেডিসিন প্রোগ্রামে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা শুরু করেন ট্রান্সজেন্ডার চিকিৎসক রুথ পল জন। ভারতে এই কোর্সে পড়াশোনা শুরু করা প্রথম চিকিৎসক তিনি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য ‘ট্রান্সজেন্ডার নীতি’ ঘোষণা করে। এর আগে ভারতের প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এমন নীতি গ্রহণ করেছিল।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে