সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ও কোটাব্যবস্থার সংস্কার দাবি- এই দুই ইস্যু চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে গণমাধ্যমের প্রধান খবর, টকশো এমনকি রাজনৈতিক অঙ্গনেও স্থান করে নিয়েছে। দেশের সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের কাছ থেকে এসব ইস্যু নিয়ে লেখালেখি অথবা অবস্থান জানতে চান তাদের ফ্যান-ফলোয়াররা।
তবে এসব ফলোয়ারদের অভিযোগ, চলমান এই দুই ইস্যুতে চুপ রয়েছেন বেশিরভাগ ইনফ্লুয়েন্সাররা। তেমনি একজন সুশান্ত পাল। ৩০তম বিসিএসের কাস্টমস কর্মকর্তা ও জনপ্রিয় ক্যারিয়ার বিষয়ক এই বক্তাও চুপ রয়েছেন। কোটা ও প্রশ্নফাঁস ইস্যুতে এই ইনফ্লুয়েন্সারের অবস্থানও জানতে চান তার ফলোয়াররা।
এবার ফ্যান-ফলোয়ারদের আগাছা বললেন সুশান্ত পালএবার ফ্যান-ফলোয়ারদের আগাছা বললেন সুশান্ত পাল
তবে সুশান্ত পাল এই দুই ইস্যুতে কোনো লেখালেখি করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এরপর যদি কারও খারাপ লাগে, তাহলে হয় আনফলো নতুবা ব্লক করে দিতে বলেছেন। এটা না করলে তিনি নিজেই তাদেরকে ব্লক করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে সুশান্ত পাল তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পেজটির বর্তমান ফলোয়ারের সংখ্যা ১.৮ মিলিয়ন (১৮ লাখ)।
স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, কোটা এবং প্রশ্নফাঁস বিষয়ে কিছু না লিখলে যদি আপনাদের খারাপ লাগে, তাহলে এত কথা না বলে আমাকে আনফলো করে দিন। (আরও ভালো হয় ব্লক করে দিলে।) এসব নিয়ে আমি আপনার মনের মতো করে লিখব না। এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
তিনি আরও লিখেছেন, এত বেশি বিরক্ত করবেন না। আমি আপনার ফরমায়েশের চাকর নই। এভাবে সহজ করে বুঝিয়ে বলার পরও যদি বিরক্ত করে যান, তাহলে বুঝব, আপনার কোনো লজ্জাশরম ও কাণ্ডজ্ঞান নেই। আপনি আমাকে ব্লক না করলে আমি আপনাকে ব্লক করব এবং অবশ্যই করব। এতে আপনার সম্মান বাড়বে না, কমবে। আমি আপনাকে সম্মান করি, আপনি নিজেও নিজের সম্মান বজায় রাখুন।
“আপনার হাতে কাজ নেই, আর আমার হাতে সময় নেই। এ কারণেই আমি চাইছি না যে, আপনি মনে এত কষ্ট নিয়েও আমাকে ফলো করুন। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোন।”
তবে এ বিষয়ে স্ট্যাটাস দিয়েও ক্ষান্ত হননি তিনি। কমেন্টে দিয়েছেন অনেকের রিপ্লাইও।
ওই পোস্টেরই কমেন্টে সুশান্ত কোটা আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে লেখেন, ‘তোমাদের তো কোটা নিয়ে এত দুঃখ থাকার কথা নয়। তোমরা তো এমনিতেই চাকরি পাবে না— কোটা থাক না থাক; আরে ভাই, প্রিলিমিনারিই তো পাশ করতে পারবে না! লজ্জাশরম ও পড়াশোনা থাকলে নিশ্চয়ই এখানে পড়ে থাকতে না।’
ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে অশোভন মন্তব্য ও কটূক্তি করার অভিযোগ ওঠার পর ২০১৬ সালে এই কর্মকর্তাকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক প্রজ্ঞাপনে সেই সময় বলা হয়েছিল, সুশান্ত পাল নামের ওই কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত করা বা স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। একই সাথে তার মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করারও আদেশ দেওয়া হয়েছিল প্রজ্ঞাপনে।
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আদিম বর্বরতা চলে, হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ব্যাপারে উদাসীন—এমন সব কথা লিখে সুশান্ত পাল ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। পরে এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলে সুশান্ত পাল তার ফেসবুকে ক্ষমাও চেয়েছিলেন।