কক্সবাজার শহরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে এক ছাত্রলীগ নেতাকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রলীগ নেতার নাম রাজিবুল ইসলাম মোস্তাক। তিনি কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের চার-পাঁচজন নেতা শহরের লালদীঘির পাড়স্থ জেলা আওয়ামিলীগ কার্যালয়ে বসে কথা বলছিলেন। এসময় হঠাৎ কয়েকশ’ কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে এসে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে উপস্থিত। তখন উপস্থিত নেতাদের কাউকে কিছু না বলে শুধু রাজিবুল ইসলাম মোস্তাককে ধরে নিয়ে যায় তারা। পরে দলীয় কার্যালয়ের পাশে নিয়ে লোহার রড ও লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁকে পিটিয়ে আহত করে চলে যায়। পরে আশপাশের লোকজন মোস্তাককে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডাক্তার আশিকুর রহমান বলেন, মোস্তাক বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার হাতে কাটার আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জানা যায়, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সকাল সোয়া ১০টা থেকে কক্সবাজার সরকারি কলেজের গেইটের সামনে ও লিংক রোডের সামনে সমবেত হন বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী। সেখান থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে নানা স্লোগান দেন তারা। এরপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় কক্সবাজার- চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। ছাত্রলীগের হামলায় অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
এদিকে বিকেল তিনটায় কক্সবাজার লিংকরোড থেকে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হয়ে শহর পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় মিছিল করতে থাকে। সন্ধ্যা ৬টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত ছিল।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, যৌক্তিক দাবি নিয়ে তারা সারাদেশের ন্যায় আন্দোলনে নেমেছে। এতে ছাত্রলীগ ও পুলিশের লোকজন এসে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে।
ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, হঠাৎ করে বহিরাগত সশস্ত্র কিছু যুবক কক্সবাজার সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে এসে অস্থিরতার চেষ্টা করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রলীগ তাদের প্রতিরোধ করেছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান বলেন, ছাত্রলীগ নেতা রাজিবের ওপর হামলার বিষয়টি জেনেছেন। এ বিষয়ে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।