24 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

জানি না অপরাধটা কী ছিল আমার, প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে, ধ্বংসাত্মক কাজ করা হয়েছে তাতে অনেকগুলো তাজা প্রাণ ঝরে গেছে। জানি না অপরাধটা কী ছিল আমার?

বুধবার (৩১) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৪’ এ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে ইস্যুটা নেই সেটা নিয়ে আন্দোলনের নামে এই ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করে দেশের অর্জনকে নষ্ট করা, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করাতে কে কী অর্জন করল সেটাই আমার প্রশ্ন?

জাতির পিতার কন্যা বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, আমি যেহেতু স্বজন হারিয়েছি। স্বজন হারাবার বেদনা আমি বুঝি। তাই যারা আপনজন হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমার সহমর্মিতা জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করেছে। স্থাপনা যে ধ্বংস করেছে সেগুলোতো পুনর্গঠন করা যাবে কিন্তু যে প্রাণগুলো ঝরে গেল সেগুলোতো আমরা আর ফিরে পাব না।

আরও পড়ুনঃ  মেটার এমন কার্যক্রম চলতে থাকলে প্রয়োজনে ফেসবুক বন্ধ করে দেব: আরাফাত

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশব্যাপী সংঘাত-সহিংসতার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জাতিসংঘের কাছেও আবেদন করেছি। আন্তর্জাতিকভাবেও বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে দেশে-বিদেশে, তাদের কাছেও আমরা সহযোগিতা চাই, এই ঘটনার যথাযথ সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং যারা এতে দোষী, তাদের সাজার ব্যবস্থা হোক। কারণ, আমি জানি এতে আমার কোনো ঘাটতি ছিল না।

সহিংসতার প্রাণহানির ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনার তদন্তে আমরা ইতোমধ্যেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কারণ, দাবির অপেক্ষা আমি রাখিনি। তার আগেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে দিয়ে দিয়েছি। আগে একজন বিচারপতি দিয়ে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছিলাম। এখন আরও দুজন লোকবল বৃদ্ধি করে তাদের তদন্তের পরিধি আরও বাড়ানোর জন্য তার নির্দেশ প্রদানের কথাও জানান তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যারা আলোচনায় বসেছিল (আন্দোলনকারী) তাদের সঙ্গে বারবার আলোচনা করেছি এবং তাদের দাবি মেনে নিয়েছি। দাবি মানব কী যেটা আমিই বাতিল করে দিয়েছি। এটাতো আমারই (কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন) ইস্যু করা। আপিল করা হয় আপিল বিভাগে এবং সেখানে হাইকোর্টের রায় (কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন বাতিল) স্থগিত করে দিয়ে আপিল বিভাগ পূর্ণাঙ্গ শুনানির তারিখ নির্দিষ্ট করে দেয়। কাজেই কোটা না থাকায় আমার জারি করা প্রজ্ঞাপনটাই আবার কার্যকর হয়। পরে আপিল বিভাগে থেকে সেটার রায়ও দিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বিকল্প রেল নেটওয়ার্ক তৈরি করবে ভারত

শেখ হাসিনা বলেন, তার কাছে ক্ষমতা কোনো ভোগের বস্তু নয়, তিনিতো আরাম আয়েশ করার জন্য ক্ষমতায় অসেননি। দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন দেশকে একটু উন্নত করতে। যেটা তিনি সফলভাবে করতে পেরেছিলেন। আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। সেই মর্যাদাকে কেন নষ্ট করা হলো? সে প্রশ্ন উত্থাপন করে এর বিচারের ভার তিনি দেশবাসীর কাছে দিয়ে দেন।

‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৪’ অনুষ্ঠানে জাতির পিতার বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাছ হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারি সম্পদ। বিস্তীর্ণ সামুদ্রিক এলাকার গভীর সমুদ্র থেকে মাছ আহরণে বেসরকারি খাতকে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান। পাশাপাশি এ বলেন গভীর সমুদ্রে মৎস্য ও সম্পদ আহরণে যতরকম সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা সরকার করবে।

আরও পড়ুনঃ  নাইমুল ইসলাম খানকে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

দেশিও প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং মৎস্য গবেষণার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করে বলেন, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মহলকে আরো উদ্যোগী হয়ে এই অবস্থানকে আরও এগিয়ে নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মাছ চাষিরা যাতে মাছের ন্যায্যমূল্য পেতে পারে সে পদক্ষেপও সরকার ইতোমধ্যে নিয়েছে।

‘জাতীয় মৎস্য পদক-২০২৪’ অনুষ্ঠানে দেশের মৎস্য খাতের উন্নয়নের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র অনুষ্ঠান প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭টি ক্যাটাগরিতে ২২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে ‘জাতীয় মৎস্য পদক-২০২৪’ প্রদান করেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জেলেদের মধ্যে স্মার্ট আইডি কার্ডও বিতরন করেন। মৎস্য চাষে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও এ অনুষ্ঠানে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ