সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকারের ক্ষমা চাওয়ার সময় শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) ফটকের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে মৃত্যু, গুলিবর্ষণ, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে গঠন করা হয়েছে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’। এই কমিশনের উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছে ইউল্যাবের অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আমরা বলেছি, সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে। এখন সেই পর্যায় পার হয়ে গেছে। এখন জনগণের পক্ষ থেকে ক্রমশ ধ্বনি উঠবে, এই সরকারের ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আপনারা কি কেউ বিশ্বাস করেন, তারা এই ন্যায়বিচার করতে পারবেন? তারা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করবেন না। কারণ তারা নিজেরাই হত্যাকারী। হত্যাকারীর কাছে কী করে হত্যার বিচার চাইবেন।’
কোটা আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় মদদে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড রাষ্ট্রীয় মদদে হয়েছে, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহযোগীদের দ্বারা হয়েছে। যাদেরকে আমরা বলতে পারি, প্রাইভেট বাহিনী। এর বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের জন্য অবশ্যই বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্দোর্জাতিক তদন্ত দরকার। আমরা আমাদের নিহত, আহত, গুম হওয়া এবং নির্যাতিত জাতীয় জনগণের পক্ষ থেকে সেই দাবিতে অকুণ্ঠ সমর্থন জানাই।’
ড. সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, ‘দেশের সিভিল সার্ভিস থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি চাকরিতে সকলের বৈধভাবে প্রতিযোগিতা করার অধিকার থাকবে কী থাকবে না, সেই প্রশ্নটা অরাজনৈতিক প্রশ্ন নয়—এটা একটা রাজনৈতিক প্রশ্ন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রশ্নের রাজনৈতিক সমাধানের দিকে না গিয়ে দেশের সরকার প্রথমে সেটা উপেক্ষা করতে চেয়েছে, পরে যে দমননীতি অবলম্বন করেছে নিজেদের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে, সেটা থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের শুরু।’
সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘যারা নিজেরাই রাজাকার, তারা অপরকে বলে রাজাকার। পৃথিবীতে এর চেয়ে পরিহাসের আর কী আছে। যারা খুনি তারা আমাদের বলে খুনি। যারা বিশ্বাসঘাতক, তারা আজ আমাদের বলে বিশ্বাসঘাতক। ক্ষমতার কেন্দ্রের চারদিকে তো রাজাকাররা বসে আছে। যে ছাত্র ২০০০ সনের পরে জন্মগ্রহণ করেছে, তাদেরকেও তারা রাজাকার বলে।