বামে মোহাম্মদপুর থানা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাজেল গাজী, ডানে নিহত কামাল হোসেন / সংগৃহীত
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা কামাল হোসেনকে (৩৫) হত্যার ঘটনায় থানা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাজেল গাজীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (৩১ জুলাই) দিবাগত রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা।
তিনি বলেন, হত্যার ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। এদের মধ্যে সুজন (২৫) নামে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তার জবানবন্দির ভিক্তিতে আরও কয়েকজনকে আটক করেছি। এদের মধ্যে হত্যায় জড়িত শ্রমিক লীগ নেতা তাজেল গাজী রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় কারাগারে ১৬ বছরের শিক্ষার্থী!
ডিবি থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো হারুনকে
ছাত্র ইউনিয়নের মশাল মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ
পুলিশের সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ জুলাই (সোমবার) রাত ৯টার দিকে মোহাম্মদপুরের কাটাসুরের তিন নম্বর রোডে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে কামাল হোসেন নামে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতাকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর নিহতের বাবা আলম চান মোহাম্মদপুর থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় সুজন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। পরবর্তীতে এই ঘটনায় জড়িত আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে শ্রমিক লীগ নেতা তাজেল গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী নেতা বলেন, তাজেল গাজীর নামে এর আগেও হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সে আগে বিএনপি করত এখন সরকার দলের সঙ্গে মিশে গেছে। মোহাম্মদপুরের স্থানীয় ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে— চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা কামাল হোসেনকে। তাজেল গাজীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা তদবির করছেন বলেও অভিযোগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজি চালক আবুল হোসেন জানান, হামলার সময় তারা কয়েকজন কাটাসুর তিন নম্বর রোডে নিহত কামাল হোসেনের বাসার সামনে বসে লুডু খেলছিলেন। হঠাৎ করে রাত ৯টার সময় কামালের বাসার সামনে চার থেকে পাঁচজন যুবক মাস্ক পরে ধারালো অস্ত্র হাতে দৌড়ে এসে তার ওপর হামলা করে। এ সময় তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা আলম চাঁন বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে এলাকায় কারো কোনো বিরোধ নেই। আমার ছেলে রাজনীতি করলেও এখন সংসারের হাল ধরতে গিয়ে অনেকদিন যাবৎ রাজনীতি থেকে দূরে আছে। সে কোনো পদপ্রত্যাশীও না যে, কারও সঙ্গে তার রাজনৈতিক বিরোধ নেই। সে আমার ইট-বালুর ব্যবসা দেখভাল করতো। তাকে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, সেটাই বুঝতে পারছি না। তদন্ত করে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বের করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (২৯ জুলাই) রাত ৯টার দিকে মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকার ৩ নম্বর রোডে নিজ বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা কামাল হোসেনকে।