পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা আয়নাঘর থেকে মুক্ত করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আজমের মেজো ছেলে সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর ছোট ছেলে মীর আহমাদ বিন কাসেম (আরমান) আয়নাঘর থেকে মুক্ত হন।
জামায়াতে ইসলামীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, আমিরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আজম রাহিমাহুল্লাহর সন্তান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (সাবেক) আব্দুল্লাহিল আমান-আল আযমী ও মীর কাসেম আলীর ছোট ছেলে মীর আহমাদ বিন কাসেম (আরমান) ফিরে এসেছেন। আল্লাহ তায়ালা যেন সব গুমকৃতদের আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন।
২০১৬ সালের ৯ আগস্ট ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাশেম আরমানকে নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় মিরপুর ডিওএইচএস’র ১১ নম্বর সেকশনের ৭ নম্বর রোডের ৫৩৪ নম্বর বাড়ির দোতালায় থাকতেন তিনি। এই বাসা থেকেই দুই শিশু সন্তান, স্ত্রী ও বোনের সামনে থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে। এরপর আর আনুষ্ঠানিকভাবে তার হদিস পাওয়া যায়নি।
এদিকে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) ‘আয়নাঘরের বন্দিদের’ সবাইকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানান সাবেক সেনা কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে একটি কমিশন গঠন করে বিডিআর হত্যাকাণ্ড, হেফাজতের আন্দোলনের কর্মসূচিতে হত্যাকাণ্ড ও ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের তালিকা করা, পুলিশ ও বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানোরও দাবি জানান তারা। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এতে কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা বক্তব্য দেন। সেখানে তারা নিজেরা ‘আয়নাঘরে’ বন্দী থাকার সময়ের কথা বর্ণনা করেন।
তারা গণমাধ্যমকে বলেন, ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘরে অনেক মানুষকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে। বন্দীদের ছাড়িয়ে নিতে আমরা অবস্থান নিয়েছি। তাদের অক্ষত অবস্থায় হস্তান্তর না করা পর্যন্ত আমরা ফিরব না। বন্দীদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান চলবে। আমাদের সঙ্গে গুম হওয়া স্বজনদের সংগঠন মায়ের ডাকও যোগ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গুম হওয়া ব্যক্তিদের গোপন স্থানে আটকে রাখার বিষয়টি গণমাধ্যমে ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিতি পায়।