প্রায় ১১ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম ইলিয়াস আলীর সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। তাঁকে সুস্থ অবস্থায় ফেরতের জোরালো দাবির মধ্যে ম ইলিয়াস আলীর ছেলে এম লাবিব শাহরিয়ার জানিয়েছেন—তার বাবার কোনো সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইলিয়াস আলীর ছেলে লাবিব শাহরিয়ার জানিয়েছেন, আমার বাবা, এম ইলিয়াস আলী’র কোনো সন্ধান আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। দয়া করে গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন। আপনারা দোয়া করুন, তিনি যাতে খুব শীঘ্রই আমাদের মাঝে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসেন। কোনো সন্ধান পাওয়ার সাথে সাথেই আমি অবশ্যই আপনাদের জানাবো।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেরত চেয়ে এক পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি লেখেন, আয়না ঘরের অনেকে ফেরত আসছে। আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন। এছাড়া ইলিয়াস আলীর মেয়েও বাবাকে ফেরত চেয়ে পোস্ট করেছেন। এছাড়াও সোমবার (৫ সোমবার) আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এ দাবি তোলেন তার সমর্থকরা।
আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পরে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে বিজয় মিছিল বের করে উচ্ছ্বসিত জনতা। এসব মিছিলে ইলিয়াস আলীর মুক্তি চেয়ে স্লোগান দেয় নেতাকর্মীরা।
বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক জেলা বিএনপির সহসভাপতি সুহেল আহমদ চৌধুরী বলেন—আজকের মধ্যেই আমরা আমাদের প্রাণের নেতা এম ইলিয়াস আলীকে ফেরত চাই।
এর আগে বিগত ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পর থেকে বিএনপির অভিযোগ—সরকার তাকে ‘গুম’ করে রেখেছে। তাকে ফেরত পাওয়ার দাবির আন্দোলনে অনেক প্রাণহানিও হয়েছে। এখনো প্রতি মাসের ১৭ তারিখ দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে উপজেলা বিএনপি।
ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হলেও সিলেটে সব ধরনের নির্বাচনসহ আন্দোলন-সংগ্রামে ইলিয়াস আলোচনায় ছিলেন। সিলেট-২ আসনে টানা তিনবার নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন দুবার। ২০০১ সালের আগে সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত এম সাইফুর রহমান ছিলেন সিলেট বিএনপির একক নেতা।
এরপর ইলিয়াস আলীর উত্থান হলে দুই ধারায় সক্রিয় ছিল সিলেট বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো। পরে ২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এক সড়ক দুর্ঘটনায় সাইফুর রহমানের মৃত্যু হলে ইলিয়াস আলী সিলেট বিএনপির একক নেতায় পরিণত হন। ইলিয়াস নিখোঁজ হওয়ার পর দুবার জেলা বিএনপির কমিটি গঠিত হয়। প্রত্যেকবারই ১ নম্বর সদস্য রাখা হয় নিখোঁজ এই নেতাকে।