গাজীপুরে ‘ডাকাত’ আতঙ্কে দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দিয়ে ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে জিপ গাড়ি ফেলে পালিয়ে গেছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। পরে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা গাড়িটি জব্দ ও গাড়িতে থাকা আট রাউন্ড গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেন।
গাড়ি রেখে পালিয়ে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তার নাম মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটে কর্মরত বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন- গাজীপুর রয়েল নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্র মাজেদুর রহমান ওরফে রুদ্র (২৪), সীমান্ত (২২) ও মোটরসাইকেলের চালক মোজাম্মেল হক (৪৫)। তাদের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী মাজেদুর রহমান বলেন, গতকাল রোববার রাত ৩টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় কয়েকজন শিক্ষার্থী ডাকাত প্রতিরোধে ও ট্রাফিকের দায়িত্ব হিসেবে অবস্থান করছিলেন।
এ সময় একটি জিপ গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে যাওয়ার সময় গতিরোধ করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় চালকের আসনে থাকা ওই ব্যক্তি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এক শিক্ষার্থীর পায়ের ওপর গাড়ির চাকা উঠিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।
অন্য শিক্ষার্থীরা তখন এক মোটরসাইকেলচালককে অনুরোধ করে ওই জিপ গাড়ির পিছু নেন। জিপ গাড়িকে ধাওয়া করে গাজীপুরের তারগাছ এলাকায় সেটিকে ধরে ফেলেন তারা। তখন জিপ গাড়ির চালক মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশপাশের লোকজন গাড়িটিকে আটক করে। পরে গাড়িতে তল্লাশি শুরু করলে চালকের আসনে থাকা ব্যক্তি কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে দৌড়ে পালিয়ে যান।
গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, কাউন্টার টেররিজম ইউনিটে কর্মরত সাইফুল ইসলাম নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা ময়মনসিংহ থেকে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য ঢাকায় যাচ্ছিলেন। কর্মস্থলে যাওয়ার সময় চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় কয়েকজন যুবক তার গাড়ির গতি রোধ করেন। যুবকরা তার গাড়ি তল্লাশি করতে চাইলে তিনি গাড়ি থেকে নেমে দেখেন কয়েকজন যুবকের মধ্যে একজনের হাতে ধারালো অস্ত্র আছে।
এ সময় তিনি ধারণা করেন শিক্ষার্থীদের পরিচয় দিয়ে হয়তো ডাকাতি করছে তারা। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা ভয় পেয়ে গাড়ি নিয়ে দ্রুত চলে যান। এ সময় তারা একটি মোটরসাইকেল নিয়ে তারগাছ এলাকায় আবার পুলিশের গাড়িটিকে আটকে দেন। এতে তিনি ভয় পেয়ে ব্যক্তিগত পিস্তল দিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে গাড়ি ফেলে রেখেই দৌড়ে পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নেন। ভোরে তিনি ফোন করে পুলিশকে ঘটনার বিস্তারিত জানান।
পুলিশের কমিশনার আরও বলেন, শুনেছি এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমরা বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখছি। ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।