কোটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতায় বুধবার ভারত বনধের ডাক দিয়েছিল ন্যাশনাল কনফেডারেশন অফ দলিত অ্যান্ড আদিবাসী সংস্থা (এনএসিডিএওআর)। ১৪ ঘণ্টার এই ভারত বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়ল বিহারে। প্রতিবেশী রাজ্যের দ্বারভাঙা ও আরাতে ট্রেন আটকে দিলেন আন্দোলনকারীরা।
জাহানাবাদ, সহরসা ও পূর্ণিয়া জেলায় একাধিক জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিহার, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ-সহ দেশের একাধিক রাজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে এই বনধের। এনএসিডিএওআর-এর দাবি সুপ্রিম কোর্টকে এই রায় প্রত্যাহার করতে হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতের শীর্ষ আদালত একটি মামলার রায়ে জানায়, তফসিলি জাতি এবং জনজাতি সমাজের মধ্যে যারা আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল তাদের কোটা বাতিল করে দেয়া হোক। পরিবর্তে তফসিলি জাতি এবং জনজাতি সমাজের আর্থিক সিঁড়িতে যারা একেবারে নীচে রয়েছেন, সেই অতি পিছিয়ে পড়া অংশকে চিহ্নিত করে তাদের বাড়তি সুবিধা দেয়ার পক্ষে রায় দেয় শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়-সহ সাত সদস্যের বেঞ্চের মধ্যে ছ’জন ‘কোটার মধ্যে কোটা’-র পক্ষে রায় দেন। আদালতের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পাশাপাশি একাধিক দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেয় এনএসিডিএওআর। কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, চন্দ্রশেখর আজাদের ভীম সেনা-সহ একাধিক দল এই আন্দোলনে সমর্থনও জানিয়েছে।
এনএসিডিএওআর-এর অভিযোগ, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মধ্যেও এই শ্রেণিবিভাজন জনজাতি-উপজাতিদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করছে। সরকার যেন সুপ্রিম কোর্টের এই রায় গ্রহণ না করে। পাশাপাশি জনজাতি, উপজাতি ও ওবিসিদের সংরক্ষণের জন্য সংসদে নতুন আইন আনার দাবি তোলা হয়েছে। সরকারি ক্ষেত্রে সংরক্ষণ প্রাপ্ত কর্মী কতজন রয়েছেন তার জাতিভিত্তিক তথ্য প্রকাশ করা এবং বিভিন্ন দপ্তরে সংরক্ষিত শূন্যপদ পূরণের দাবি জানিয়েছে ওই সংগঠন।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে তার জন্য বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন পদক্ষেপ করছে বলে খবর। আশঙ্কা করা হচ্ছে জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি ক্ষেত্রে এই ধর্মঘটের প্রভাব পড়তে পারে। জানা যাচ্ছে, ধর্মঘটের কারণে রাজস্থানের জয়পুর, ভরতপুর, মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র-সহ একাধিক রাজ্যে ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে স্কুল কলেজ। একাধিক শহরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।