23 C
Dhaka
Friday, November 22, 2024

আশুলিয়ায় ভ্যানে দেহের স্তূপ : শনাক্ত হলো আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা

আশুলিয়া থানার সামনে গুলি করে হত্যার পর ছাত্র-জনতার মরদেহ গুনে গুনে ভ্যানে স্তূপ করা ও পরে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকা আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন—আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক আবুল হাসান ও সহকারি উপপরিদর্শক বিশ্বজিৎ।

এর আগে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের ভেস্ট পরা ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাত হোসেনকে শনাক্ত করা হয়।

পৈশাচিক এই ঘটনার সময় ইউনিট কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে সাফি মোদ্দাসের খান জ্যোতির ঘনিষ্ঠ বন্ধু পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ২৯ ব্যাচের কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফী ও আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম সায়েদ। এদের মধ্যে সম্প্রতি এ এফ এম সায়েদকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে বদলি করা হয়। ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর আত্মগোপনে চলে গেছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা। যে কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে আশুলিয়া থানার নিয়মিত কার্যক্রম।

আরও পড়ুনঃ  এবার জয়ের উদ্দেশে যা বললেন সারজিস

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ও পালিয়ে দেশ ছাড়ার পর ৫ আগস্ট বিকেলে ছাত্র জনতা বিজয় উল্লাস নিয়ে থানার দিকে আসে। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। ঘটে নির্মম গণহত্যা। এরপর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মত পৈশাচিক কাজ করে তারা। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হলে ভ্যানে লাশের স্তূপে থাকা ব্রাজিলের জার্সি দেখে স্বামী আবুল হোসেনকে শনাক্ত করেন গার্মেন্টসকর্মী লাকি আক্তার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক মিনিটি ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায় একটি ব্যাটারিচালিত অটো ভ্যানের ওপর ছয় থেকে সাতজনের নিস্তেজ দেহ স্তূপ করে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা। সেই স্তূপের ওপর আরেকটি দেহ চ্যাংদোলা করে তুলছিলেন দুজন। তাদের মধ্যে ভিডিওতে পুলিশের হেলমেট ও ভেস্ট পড়া একজনকে প্রথমে শনাক্ত করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  এমন সমাজ চাই না যেখানে সেনাবাহিনী, পুলিশ দিয়ে উৎসব পালন করতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাত হোসেনকে দিয়েই মূলত ঘটনাস্থল শনাক্ত করা হয়। তারপরে একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে সেই দিনে পুলিশের নির্মমতার নানা চিত্র। ওই গণহত্যার ঘটনা তদন্তে ইতিমধ্যে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। কমিটির প্রধান করা হয়েছে এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সাজিদুর রহমানকে। তিনি জানান, জড়িতদের অনেককেইশসনাক্ত করা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কাজ চলছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ বলেন, ‘কার নির্দেশে এমন নৃশংস ঘটনা এবং পরে মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কমিটির সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে আরও যাচাই-বাছাই করবেন। আমার বিশ্বাস শুধু আরাফাত, বিশ্বজিৎ কিংবা হাসান নয় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের মধ্য দিয়ে সব দোষীর নামই উঠে আসবে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই আমরা ছাড় দেব না। বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ  গ্রেপ্তার হচ্ছেন অনেকে, শেখ পরিবারের সদস্যরা কোথায়?
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ