বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার জেরে মাদারীপুরে একটি গ্রামের অন্তত ৫০টি ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় ১০টি ঘরে আগুনও দেয়া হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ২০ জন। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাদারীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের চর ব্রাক্ষ্মন্দী গ্রামের ফরহাদ সর্দার অংশ নেয়। এতে ওই এলাকার আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা তাকে ভয়-ভীতি দেখায়। পরে সে কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যায়। এ ঘটনার জেরেই চর ব্রাক্ষ্মন্দী গ্রামের তৈয়ব হাওলাদার, বাবু হাওলাদার, মাসুদ হাওলাদারসহ অর্ধশত লোকজন নিয়ে রোববার ভোরে ফরহদা সর্দারের বাড়িতে আগুন দেয়।
এতে মুহূর্তের মধ্যেই পুরো ঘর পুড়ে যায়। পরে একে একে ওই এলাকার কাওছার সর্দার, নতু বেপারী, নেছার সর্দার, লতিফ বেপারী, মরিয়ম বিবি, হেলাল সর্দার, হালিম সর্দারের ঘরসহ ছোট-বড় মিলে ১০টি ঘরে আগুন দেয়া হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধরা একই এলাকার অলিল খান, বিতান সর্দার, বক্কর সর্দার, মুজাম সর্দার, আক্তার শিকদার, আকবার শিকদার, এয়ার শিকদার, নাহিদ খান, হানিফ সর্দার, কুতুব আকন, হামেদ আকন, মালেক আকন, বেলাল খানের ঘরসহ অর্ধশত ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ঘরের আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণালঙ্কার, মোটরসাইকেলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ভাঙচুর চালায়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মাদারীপুর সদর ও কালকিনি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় সদর থানা পুলিশ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মাকেল আকন বলেন, ‘আমরা বিএনপির রাজনীতি করি বিধায় আমাদের উপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী আক্রমণ করে বাড়ি-ঘর ভেঙে শেষ করে দিয়েছে। পুলিশকে বার বার ফোন করেও পাইনি। সারাদেশ স্বাধীন হলেও আমরা এখনো আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি। এদের বিচার করা হোক।’
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ‘বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলও জানেন।’
তবে ঘটনার পরে এলাকা থেকে গা-ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্তরা। তাদের বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি।