শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের মিছিলে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মন্টু খান নামে এক ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় শরীয়তপুর সদর উপজেলার রাজগঞ্জ ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত মন্টু খান (৪৫) সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের আড়িগাঁও এলাকার কুটি মিয়া খানের ছেলে ও তুলাসার ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলেক্ষ্যে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ জেলা শহরে শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শরীয়তপুর-১ (পালং-জাজিরা) আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু ওই শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন। শোভাযাত্রা উপলক্ষ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জেলা শহরের শহীদ মিনারের সামনে সমেবেত হন। তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ফকিরের নেতৃত্বে আড়িগাঁও বাজার থেকে একটি মিছিল শোভাযাত্রায় যোগ দিতে আসে। ওই মিছিলে স্লোগান দিতে এসেছিলেন মন্টু খান। প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ হেঁটে মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় অন্যদের সঙ্গে মন্টু খানও এসেছিল। সেখান থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে । মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে সাড়ে ৬ টার দিকে রাজগঞ্জ ব্রিজ এলাকায় মন্টু খান অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু ও ঘোড়া মার্কা প্রতীকের সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান উজ্জল সদর হাসপাতালে গিয়ে মন্টু খানের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শেহেরিয়ার ইয়াসিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তার স্বজনদের কাছে জানতে পেরেছি মন্টু খান নাকি মিছিলে গিয়েছিল। মূলত তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন। ইসিজি করার পর তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছি আমরা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিদ্দিক মিয়া বলেন, আমরা তুলাসার ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রার মিছিল নিয়ে বের হয়েছিলাম। মিছিলে যাওয়ার পরে অনেক গরমে মন্টু ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে একটি দোকানে নিয়ে পানি খাওয়াই। এর একটু পরেই সে মাটিতে পড়ে যায়। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বলেন তিনি মারা গেছেন।
বিষয়টি নিয়ে তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ফকির ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আমার কোনো কর্মী হারাইনি, আমি আমার ভাইকে হারিয়েছি। গরমের মধ্যে মিছিলে আমার ভাই অসুস্থ হয়ে মারা যাবে, এটা আমি ভাবতেও পারিনি। তার সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও আত্মার সম্পর্ক ছিল। আমি নিজে তাকে ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের দায়িত্ব দিয়েছিলাম।
শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে ঢাকা পোস্টকে বলেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে প্রতি বছরের মতো এ বছরও শোভাযাত্রার আয়োজন হয়েছিল। ওই শোভাযাত্রায় যোগ দিয়ে শ্রমিক লীগ নেতা মন্টুর মৃত্যুর ঘটনাটি দুঃখজনক। মন্টু আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিল, আমরা তার পরিবারের পাশে থাকব।