27 C
Dhaka
Friday, November 22, 2024

ইরানে হামলা হলে আকাশসীমা বন্ধ করে দেবে আরব দেশগুলো

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা বন্ধ রাখতে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইরান বলেছে, ইসরায়েলকে সহায়তাকারী যে কোনো দেশকে তারা আগ্রাসনকারী হিসেবে বিবেচনা করবে এবং এমন প্রতিবেশীরা ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আসবে। এ প্রেক্ষাপটে সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও কাতার যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানকে জানিয়েছে, হামলা হলে ইসরায়েলকে তারা তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না। জর্ডানও তার আকাশসীমায় যে কোনো অনুপ্রবেশ ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছে।

শুক্রবার সিএনএনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, সম্ভাব্য হামলা নিয়ে ইরানে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ইসরায়েলে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে শক্তির জানান দিলেও পাল্টা হামলার মাত্রা যাতে কম বা কার্যত ব্যর্থ হয়, সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ইরান। তেল ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে বোঝাতে যুক্তরাষ্ট্র সফল হবে কিনা, তা নিয়েও দেশটি উদ্বিগ্ন।

আরও পড়ুনঃ  পেঁয়াজ আমদানির বিকল্প উৎস হতে পারে মিশর, ভারতের সূর পরিবর্তন

গত ১ অক্টোবর চালানো ইরানের হামলার জবাব ইসরায়েল কীভাবে দেয়, তা জানতে দীর্ঘদিনের মিত্রের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এখনও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেল ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চায় না– এটা দেশটির কর্মকর্তারা আগেই তেল আবিবকে জানিয়ে দিয়েছেন। দুই মাসের মধ্যে গত বুধবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিহুর সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে তিনি জানান, ইসরায়েলের পাল্টা হামলা ‘সমানুপাতিক’ হবে, এটাই তাঁর চাওয়া।

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে পরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং কাতারও ইরানের তেল স্থাপনায় সম্ভাব্য হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে শঙ্কার কথা জানিয়েছে। আরব কূটনীতিকরা বলছেন, পাল্টা হামলা হলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইরান ও ইসরায়েল সংঘাতে জড়ালে তা আঞ্চলিক যুদ্ধ হিসেবে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা অবধারিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রকেও টেনে আনতে পারে– এ নিয়েও বেশি উদ্বিগ্ন মার্কিন প্রশাসন।

আরও পড়ুনঃ  মোদিকে অভিনন্দন জানিয়ে নেতানিয়াহু লিখলেন ‘বাধাই হো’

শঙ্কার বিষয় হলো, গত এক বছর ধরেই ইসরায়েলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমতে দেখা গেছে। গাজার মতো লেবাননেও হামলার ক্ষেত্রে সংযম দেখাতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইসরায়েল ক্রমাগতভাবেই সেসব আহ্বান উপক্ষো করছে। গত এক মাসে লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানিও সেটির প্রমাণ দেয়।

তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ও বৈরুতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরাল্লাহর হত্যা ও গাজা-লেবাননে অব্যাহত হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েলে ১৮০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। এগুলোর বেশির ভাগই তেল আবিবসহ বিভিন্ন শহরে আঘাত হানে। এতে প্রাণহানি না হলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট গত শুক্রবার শক্তিশালী হামলার হুঁশিয়ারি দেন।

এদিকে ইরানের প্রেস টিভি অনলাইন জানায়, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়েছে ইসরায়েল। সেখানে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। শুক্রবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, স্থল অভিযানে তাদের এক ডজনের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
পৃথক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, বিভিন্ন অবস্থানে তারা ইসরায়েলের সেনাদের টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে।
আলজাজিরা জানায়, ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইরানের তেল কোম্পানিগুলো ও তেলবাহী জাহাজের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ইরানের রাজস্ব কমাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  আমরা নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করব : নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা

এদিকে গাজায় গণহত্যা চালানোর জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়া। শুক্রবার দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট রজারিও মুরিলো গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল যৌথ সামরিক মহড়ার সাংকেতিক নাম জুনিপার

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ