28 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া নিয়ে দ্য হিন্দুকে যা বললেন ড. ইউনূস

আগামী নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের পক্ষে বিএনপি যে অবস্থান নিয়েছে তা উপেক্ষা করা হবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূসের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, আওয়ামী লীগ কি আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাবে? জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা ইতিমধ্যেই ঘোষিত হয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি। বিএনপি এটা করেছে, তারা বলেছে সব রাজনৈতিক দল অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সুতরাং তারা ইতিমধ্যে রায় দিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের মতামতকে উপেক্ষা করব না।’

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আপনার কোনো আপত্তি নেই, জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘কোনো একটি নির্দিষ্ট দল বা পক্ষকে নেওয়ার জন্য আমি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। আমি রাজনীতিকদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করছি।’

আরও পড়ুনঃ  ‘মাথা ন্যাড়া’ করে দেশ থেকে পালিয়েছেন মতিউর!

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তত এখন ভারতে অবস্থান করছেন, এটা কোনো সমস্যা নয়। বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর কথা বলাটা সমস্যা। তিনি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন, আর সেগুলো রাজনীতি নিয়ে। তিনি তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন, এটাই সমস্যা।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘তিনি মানুষকে বেরিয়ে আসতে বলছেন এবং ঢাকা ও অন্যান্য শহরের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে বলছেন। তাঁর অডিও ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানে তিনি তাদেরকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি সঙ্গে রাখতে বলছেন, যেন পুলিশ বাধা দিলে তাঁরা বলতে পারেন, বাংলাদেশ সরকার আমেরিকার বিরুদ্ধে। এটি অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ।’

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে সরাসরি ভারতকে অনুরোধ করা হলো না কেন?– জানতে চাইলে তিনি বলেন,
‘তাঁকে ফিরিয়ে আনতে আমরা সব আইনি পথ অবলম্বন করব। আমি মনে করি, কিছু আইনি ধাপ রয়েছে। আমরা সেগুলোর দিকে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা এখনো ওই পর্যায়ে পৌঁছাইনি।’

আরও পড়ুনঃ  আমার বাবা ন্যায়বিচার না পেলে বিদ্রোহ করব : তবিব

ভারত বাংলাদেশের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলে কি হবে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘হ্যাঁ, এমন কিছু ধারা আছে। কিন্তু ভারত সরকার যদি তাঁকে সেখানে রাখতে এগুলো প্রয়োগ করে, তাহলে সেটা আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবে না। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ খুব কম। তাই এই সময়ে হয়তো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সবকিছু মীমাংসা করা যাবে না। তবে আমাদের পরে যে সরকারই আসুক না কেন, তারা এটা ক্ষমা করবে না।’

এছাড়াও সাক্ষাৎকারে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আমেরিকার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন ড. ইউনূস। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিবৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত তিনি সঠিকভাবে অবগত নন। এটা অপপ্রচার, যা বিশ্বজুড়ে চলছে। কিন্তু যখন তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বাস্তবতা সম্পর্কে জানবেন, তখন জনাব ট্রাম্প অবাক হবেন যে তাঁকে কতটা ভিন্নভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানানো হয়েছে।’

আরও পড়ুনঃ  মুন্নি সাহার লাইভ বিডিআর বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মনে করি না, শুধু আমেরিকার একজন নতুন প্রেসিডেন্টের কারণে সবকিছু বদলে যাবে। পররাষ্ট্রনীতি ও দেশের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক প্রেসিডেন্ট পদে পরিবর্তনের কারণে সাধারণত পরিবর্তিত হয় না। তা ছাড়া ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যদি পরিবর্তন হয়ও তাহলে আমাদের মনে রাখতে হবে এটাও বাংলাদেশ ২, যেটাকে আমরা বলছি নতুন বাংলাদেশ। সুতরাং আমরা অপেক্ষা করব এবং যদি মার্কিন প্রতিনিধিরা আসেন ও দেখেন এবং আমাদের অর্থনীতি যদি ভালো করতে থাকে তাহলে তারা খুবই আগ্রহী হবে।’

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ