যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনার মধ্যেই ইসরাইল ভূখণ্ডে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। রোববার (২৪ নভেম্বর) এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। অন্যদিকে বৈরুতে ব্যাপক বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী।
সোমবার সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ইসলাইলের বিভিন্ন অঞ্চলে অন্তত ৩৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ছুড়েছে হিজবুল্লাহ। এ ঘটনায় অন্তত ১১ জন আহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, প্রথমবারের মতো তারা ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে আশদোদ নৌঘাঁটিতে ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। পরে সংগঠনটি আবার জানায়, অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে তেল আবিবের একটি ‘সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে’ মুহুর্মুহু হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া তেল আবিবের উপকণ্ঠে গ্লিলট সেনাবাহিনী গোয়েন্দা ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তারা।
আলজাজিরা বলেছে, হিজবুল্লাহর হামলায় মালোন শহরের একটি কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেতুলা শহরও ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেল আবিবের উপকণ্ঠসহ উত্তর-পূর্ব ও মধ্য ইসরাইলের একাধিক জায়গায় সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে। আকাশপথে হামলা হলে এমন সাইরেন বাজানো হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর ছোড়া প্রায় আড়াই শ ক্ষেপণাস্ত্র লেবানন থেকে ইসরাইল প্রবেশ করেছে। এর আগে রোববারই ১৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছিল তারা। ইসরাইলি বাহিনীর দাবি, এর মধ্যে বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে থাকতেই ধ্বংস করা হয়েছে।
পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলও। লেবাননের সশস্ত্র বাহিনীর স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলার দাবি করেছে তারা। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের ৫ এলাকার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি প্রশাসন। লেবাননজুড়ে চালানো এসব হামলায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায় লেবাননের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত বৈরুতে সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এদিকে, গাজা ও লেবাননে ইসরাইলি বাহিনী যুদ্ধ চালিয়ে গেলেও সংঘাত বন্ধ চান দেশটির সাধারণ মানুষ। একটি জরিপের তথ্য বলছে, ইসরাইলের ৫৪ শতাংশ বাসিন্দা যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আর ২৮ শতাংশ মানুষ যুদ্ধ বন্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন।