অবসরে গিয়েও প্রতিদিনের মতো অফিসে গিয়ে নিজের চেয়ারে বসে রীতিমতো ফাইল স্বাক্ষর করছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক উপপরিচালক আব্দুল মালেক। এমনকি সন্ধ্যার পরেও গোপনে অফিসে এসব কাজ করছেন তিনি। আর এসব ফাইলে স্বাক্ষর করা হচ্ছে ১৫ তারিখের আগের তারিখ বসিয়ে। এতে ব্যাপক ঘুষ লেনদেন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২১ মে) সরেজমিনে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে গিয়ে ফাইল ডেসপাস শাখায় কালবেলার পক্ষ থেকে রেজিস্টার খাতা দেখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনোভাবেই ওই খাতা দেখাতে রাজি হয়নি কর্তৃপক্ষ। এর আগে রোববার (১৯ মে) অধিদপ্তরে গিয়ে আব্দুল মালেককে সশরীরে অফিস করার সত্যতা মেলে।
জানা যায়, গত ১৫ মে অবসরে গেছেন এ আব্দুল মালেক। এ অবসরও তাকে অফিস করা বন্ধ করতে পারছে না। অফিস যেন এক অদৃশ্য মায়ায় আবদ্ধ করে রেখেছে তাকে। ১৬ মে থেকে ২০ মের মধ্যে অফিস খোলা ছিল মাত্র তিন দিন। আর এ তিন দিনে ১৭২টি প্রোজেক্ট ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। এসব ফাইলে স্বাক্ষর করা হচ্ছে ১৫ তারিখের আগের তারিখ বসিয়ে। প্রতিটি ফাইলের জন্য নিয়েছেন ২০ লাখ টাকা করে। তাছাড়া ছোটখাট ফাইলও ঘুষ ছাড়া স্বাক্ষর করেন না তিনি। অবসরের পরে এ তিন দিনে অফিস করে সব মিলিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন ৩৪ কোটি টাকা।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনো চিঠি বা ফাইল স্বাক্ষরের পর অধিদপ্তরের ডেসপাস শাখায় স্মারক নম্বর বসিয়ে রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু অভিযোগ পাওয়া যায়, পেছনের তারিখ বসিয়ে যেসব ফাইল স্বাক্ষর করা হয়েছে, সেগুলো বিতরণ শাখা থেকে পেছনের তারিখ বসিয়ে হস্তান্তর করার জন্য রেজিস্টার খাতা ফাঁকা রাখা হয়েছে। ১২ মে থেকে ১৫ মে তারিখের রেজিস্টারে যেসব জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে সেখানে পুরোনো তারিখ বসিয়ে ফাইলগুলো হস্তান্তর করা হবে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে কালবেলার পক্ষ থেকে রেজিস্টার খাতা দেখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনোভাবেই ওই খাতা দেখাতে রাজি হয়নি অধিদপ্তরের মিডিয়া মুখপাত্র ও পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। এমনকি অবসর গ্রহণের পর আব্দুল মালেকের অফিস করার বিষয়েও কর্তৃপক্ষ কিছু জানতে না বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
এসব বিষয়ে কথা বলতে মহাপরিচালকের সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে চাইলে অফিসে থাকা সত্ত্বেও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে রোববার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে গিয়ে সরাসরি আব্দুল মালেকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিক দেখে কথা না বলে দ্রুত সটকে পড়েন তিনি।