ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যায় জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তার মত্যু নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। এ ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ।
বুধবার (২২ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আনার হত্যাকাণ্ড আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে, হত্যার কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিস্তারিত জানাবে।
তিনি বলেন, এরইমধ্যে ঘটনার মূলহোতাসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা মিশনের মাধ্যমে সবকিছুর খোঁজ রাখছি। মিশন কলকাতা পুলিশের সাথে যোগাযোগ রাখছে। তদন্ত শেষে হত্যার মূল কারণ জানা যাবে। এ হত্যাকাণ্ড দুই দেশের বিষয় নয়, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
এদিকে ২৪তম জাতীয় নবায়ণযোগ্য জ্বালানি সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবী প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন। পৃথিবী এখন যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে, তার ৮০ শতাংশের জন্যই দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন। কার্বন নিঃসরণ মোকাবেলায় পৃথিবীর সব দেশ যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলো সব বাস্তবায়ন হলেও বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি বেড়ে যেতে পারে। তখন কী অবস্থা দাঁড়াবে পরিস্থিতি, তা কল্পনারও বাইরে।
জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্ত নেতিবাচক প্রভাব দ্বারা বাংলাদেশ আক্রান্ত। যদিও এখানে আমাদের দায় নেই। চট্টগ্রাম শহরে ২০ বছর আগে-পরে কতটা পরিবর্তন হয়েছে, সেটা আমি নিজ চোখে দেখেছি। জোয়ার-ভাটার পানি এখন চট্টগ্রাম শহরের অভিজাত এলাকায় চলে আসে বলেও জানান তিনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ, আর ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ জ্বালানি সবুজ উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। যদিও এটা আমাদের দায় নয়। এটা উচ্চাভিলাষী হলেও অর্জন করা সম্ভব। এজন্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও বাংলাদেশ চেষ্টা করছে ক্লিন এনার্জিতে যাওয়ার। ক্লিন এনার্জি উৎসাহিত করতে যতদ্রুত সম্ভব আমাদের কিছু নীতি সংস্কার-সংশোধন করা প্রয়োজন। না হলে কেউ সৌরবিদ্যুতে বিনিয়োগ করবে না। হাইড্রোজেন এনার্জির ওপরও আমাদের গুরুত্ব দেয়া উচিৎ।
সাবেক সেনাপ্রধান আব্দুল আজিজ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে আইনের আওতায় সাবেক সেনাপ্রধানকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে, সেটা দুর্নীতির কারণে, এটা তার ব্যক্তিগত দায়।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদন পুরোটা না দেখে মন্তব্য করতে চাই না, সেটা সমীচীন হবে না বলেন তিনি।
এদিকে এমপি আনার খুনের ঘটনায় তিনজনকে আটক করার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, খুনের সাথে বাংলাদেশিরাই জড়িত।
এ সংসদ সদস্য গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার দুদিন পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ আমরা পাইনি। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে তার মেয়ে আমাদেরকে বিষয়টি জানায়। বিষয়টি আমলে নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ রাখছিল। সবশেষ ভারতীয় পুলিশের মাধ্যমে আমরা আজ নিশ্চিত হয়েছি, আনোয়ারুল আজিম খুন হয়েছেন। ভারতীয় পুলিশের দেয়া তথ্য এবং আমাদের সন্দেহ দুটো মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আমরা তিনজনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত চলছে। আনারের হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনই বাংলাদেশি বলেও জানান তিনি।