ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যা করা হয়েছে সেটি বিশ্বাস করতে পারছেন না তার কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
রোববার (২৬ মে) দুপুরে কালীগঞ্জের নিজ বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি করেন।
ডরিন বলেন, আমার বাবার ব্যবহৃত শার্ট-প্যান্ট, জুতা, হাতের দুইটি আংটি, ব্রেসলেট, চশমা ও পকেটে থাকা চিরুনির কিছু একটা প্রমাণ স্বরূপ আমাদের দেখাতে হবে। তার ব্যবহৃত আরও অনেক জিনিস ছিল।
তিনি বলেন, কিছু না কিছু একটা তো পাওয়া যাবেই। তা না হলে আমার বাবার শরীরের এক টুকরো মাংস ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রমাণ হিসেবে আমাকে দিতে হবে। আমি বিশ্বাস করব কিভাবে যে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে।
এমপি আনারের মেয়ে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন যে, শ্বাসরোধ করে তাকে মেরে ফেলা হয়। পরে ছুরি বা চাকু কিছু একটা দিয়ে তার শরীরের চামড়া ছাড়ানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোনো কিছুই উদ্ধার করতে পারেননি তারা। উল্লেখ্য, আনোয়ারুল আজীম আনার ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ উপজেলা) আসনে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে এমপি নির্বাচিত হন।
গত ১২ মে তিনি চিকিৎসার কথা বলে ভারতে যান। ১৪ মে থেকে পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটিও বন্ধ ছিল। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কলকাতায় উপদূতাবাসে যোগাযোগ করে খোঁজ নিতে বলা হয়।
এদিকে চিকিৎসার জন্য ১২ মে দুপুরের দিকে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন আনোয়ারুল আজীম। ওইদিন সন্ধ্যায় কলকাতার অদূরে ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনের স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও দীর্ঘদিনের বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে পৌঁছান তিনি। পরদিন ‘বিশেষ প্রয়োজনের’ কথা বলে গোপালের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান আনোয়ারুল আজীম। পরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে কলকাতার বরাহনগর থানায় ১৮ মে লিখিত ‘মিসিং ডায়েরি’ করেন গোপাল বিশ্বাস। গত ২২ মে সকালে গোপাল বিশ্বাস স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, এমপি আজীমকে হত্যা করা হয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ তাকে জানিয়েছে। কলকাতার নিউ টাউনের বিলাসবহুল আবাসন ‘সঞ্জিভা গার্ডেন’ নামে একটি ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে এই এমপি হত্যার শিকার হন।