‘দুর্নীতিবাজরা দেশ ও জাতির শত্রু’, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের জিহাদ করতে হবে’, ‘দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে কোনো আপস নাই’; এসব উক্তিগুলো করেছিলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ও বাংলাদেশ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। এরইমধ্যে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে তলব করেছে। আর এমন সময়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর অতীতের বক্তব্যগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
দুদকের নথিতে দেখা যায়, বেনজীর ও তার পরিবার ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২০৪ দশমিক ৫ একর জমি কিনেছেন। তিনি ও তাঁর পরিবার শুধু ২০২০ ও ২০২১ সালে ৮৭ দশমিক ৯ একর জমি কিনেন। এরআগে আদালত বেনজীরের ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশে ও বিদেশে বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ সম্পদ করার তথ্য জনসম্মুখে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে তার দেওয়া বক্তব্যগুলোও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেনজীরের জিহাদ
গত ২০২১ সালের ১৪ জুন পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি বলবৎ করতে হবে। আমি চাই পুলিশের সদস্যরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করবে। তরুণ পুলিশ কর্মকর্তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে হুইসেল ব্লোয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ব্যক্তিস্বার্থকে রাষ্ট্রের স্বার্থের ওপরে স্থান দেওয়া যাবে না।’
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘জঙ্গিদের সঙ্গে কোনো আপস নাই, মাদকের সঙ্গে কোনো আপস নাই, দুর্নীতির সঙ্গে কোনো আপস নাই। কাউকে ভয় পাবেন না। দুর্নীতিবাজরা বিদায় হবে, আমরাই থাকব।’
২০২২ সালের ৩০ মে এক বক্তব্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে দেওয়া এক বক্তব্যে বেনজীর আহমেদকে বলতে শোনা যায়, ‘জনগণের ক্ষমতা আর রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে অবজ্ঞা করার দুঃসাহস যারা দেখায় তারা আহম্মক। রাষ্ট্রের কাছে এসমস্ত অপশক্তি অতি তুচ্ছ।’
২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল র্যাবের ডিজি হিসেবে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘রিলিফ ও ওমএসর চাল নিয়ে কাউকে আমরা ছিনিমিনি খেলতে দেব না। এ ধরনের তথ্য কারও কাছে থাকলে আমাদের জানাবেন। এটি কোনোক্রমেই সহ্য করা হবে না।