Wednesday, February 5, 2025

এস আলমের চিনি, ইস্পাত ও ব্যাগ কারখানা বন্ধ ঘোষণা

আরও পড়ুন

এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ ও প্রশাসনের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিনের সই করা নোটিশে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনিবার্য কারণবশত আগামীকাল বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানাগুলো বন্ধ থাকবে। তবে কারখানার নিরাপত্তা, সরবরাহ ও জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে।

দেশের বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের ছয়টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

অনিবার্য কারণ দেখিয়ে আগামীকাল বুধবার থেকে চিনি, ইস্পাত ও ব্যাগ- এই তিন খাতের কারখানাগুলো বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কারখানায় বন্ধের নোটিশ টাঙানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ ও প্রশাসনের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন।

ঘোষণা দেখার পরে বিকাল চারটা থেকে বিক্ষোভ করেছেন সংশ্লিষ্ট কারখানা শ্রমিকরা। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হলে আবারও কারখানা চালু হওয়ার কথা বলে তাঁদের সান্ত্বনা দেন কর্মকর্তারা।

মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিনের সই করা নোটিশে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনিবার্য কারণবশত আগামীকাল বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানাগুলো বন্ধ থাকবে। তবে কারখানার নিরাপত্তা, সরবরাহ ও জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে।

আরও পড়ুনঃ  আমির হোসেন আমু ও তার স্ত্রী-মেয়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

এ ছয়টি কারখানায় অন্তত ১২ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন এস আলমের কর্মকর্তারা।

বন্ধ ঘোষণা করা কারখানাগুলো হলো – এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড–নফ, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড ও ইনফিনিটি সি আর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এর মধ্যে দুটি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার কালারপুল, তিনটি ইছানগর ও একটি বাঁশখালীতে অবস্থিত।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতের একসময়ের শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ অতীতে ৭টি ব্যাংকের ওপর প্রভাব রেখেছিলেন। শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনকালে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এক লাখ কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠে।

আরও পড়ুনঃ 

এস আলম গ্রুপের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এটি প্রায় দুই ডজন কোম্পানির মালিক, যার মোট সম্পদের মূল্য আনুমানিক দেড় লাখ কোটি টাকা। গ্রুপটি চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অসংখ্য কারখানা পরিচালনা করে।

ব্যাংকিং খাতের এবং এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন সূত্র বলছে, এখন ব্যাংকগুলো এস আলম গ্রুপের সঙ্গে নতুন ব্যবসায় জড়াতে আগ্রহী নয়। আর যেসব ব্যাংক ঋণপত্র (এলসি) খুলতে রাজি হচ্ছে, সেগুলোও গ্রুপটির কুখ্যাতির কারণে শতভাগ মার্জিন দাবি করছে।

গত ৫ আগস্ট হাসিনার সরকার বিদায় নেওয়ার পর থেকে মাসুদ এবং তার ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে গেছেন অথবা দেশত্যাগ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে এস আলম গ্রুপের সমস্যা আরও গভীর হয়েছে।

অর্থনৈতিক চাপে পড়ে এস আলম গ্রুপ ইতোমধ্যে কয়েকটি কারখানা বন্ধ করেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মীকেও ছাঁটাই করা হয়েছে। কোম্পানিটি তাদের পূর্বের উৎপাদনশীলতা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  কালীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদে তালা দিল বিএনপি

এর আগে এস আলম গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজার আশীষ কুমার নাথ জানিয়েছিলেন, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল এবং এস আলম রিফাইন্ড সুগার নামক দুটি কারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যান্য কারখানাও একই ঝুঁকিতে রয়েছে।

‘আমরা এলসি খুলতে না পারায় আমদানি করা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি কারখানাগুলোও একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে,’ বলেন তিনি।

ইসলামী ব্যাংকের অন্যতম গ্রাহক এস আলম গ্রুপ। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ পেপার ভিত্তিক ফার্মের মাধ্যমে ব্যাংকটির শেয়ার কিনে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে তারা এস আলম গ্রুপের ঋণপত্র খুলতে শতভাগ মার্জিন চাচ্ছেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ