জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ভেতরে মুসল্লিদের রক্তাক্ত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে মুফতি রুহুল আমীনসহ তার হামলাকারী তার সহযোগীদের আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। রুহুল আমীন সাহেবের পলাতক নেত্রী খুনি হাসিনা বলেন ‘চট করে’ দেশে ঢুকে যাবেন। তাই তিনিও ‘চট করে’ মসজিদের মিম্বার দখলে দিতে চেয়েছেন।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর সূত্রাপুর দক্ষিণ থানার উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ‘প্রত্যাশিত বাংলাদেশ ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে অনুপস্থিত থাকা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব রুহুল আমীন ফিরে আসার ঘটনায় খতিবের সমর্থক ও মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খতিব জটিলতায় থমথমে পরিস্থিতি ও সংঘর্ষের মধ্যেই শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
মসজিদের ভেতর এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ কেবল মন্দির, গির্জা ভাঙে না, মসজিদও ভাঙে। মসজিদের ভেতরও আওয়ামী লীগের হাতে মানুষ নিরাপদ নয়। আওয়ামী লীগের দালাল রুহুল আমীনকে শেখ হাসিনা বায়তুল মোকাররমের খতিব নিয়োগ দিয়েছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রুহুল আমীনও পালিয়ে গিয়ে গোপালগঞ্জে ঢুকে পড়েন। মসজিদে আর ইমামতি করতে আসেনি। পরবর্তীতে তাকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও জবাব দেননি। এতে ইসলামি ফাউন্ডেশন নতুন খতিব নিয়োগ করে। নতুন খতিব নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গেই পূর্বের খতিব অব্যাহতি পেয়ে যান। কিন্তু আওয়ামী লীগের ওই দালাল শুক্রবার গোপালগঞ্জের একদল সন্ত্রাসী নিয়ে এসে বায়তুল মোকাররমে মিম্বার দখল নিয়ে নিজেকে এখনো খতিব দাবি করেন। উপস্থিত মুসল্লিরা এর প্রতিবাদ করলে, তার নির্দেশে সহযোগী সন্ত্রাসীরা মসজিদের ভেতরেই মুসল্লীদের রক্তাক্ত করে। রুহুল আমীন সাহেবের পলাতক নেত্রী খুনি হাসিনা বলেন ‘চট করে’ দেশে ঢুকে যাবেন। তাই তিনিও ‘চট করে’ মসজিদের মিম্বার দখলে দিতে চেয়েছেন।
আওয়ামী লীগ স্বাধীন দেশকে পরাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল বলে মন্তব্য করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীন দেশকে পরাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করার সব ধরনের অপচেষ্টা চালিয়েছে। ভারত বাংলাদেশে সেবা দাস সরকার প্রতিষ্ঠা করে এদেশ থেকে সব কিছু নিয়ে গেছে। কখনো গোপন চুক্তির মাধ্যমে আবার কখনো লুট করে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আর অল্প কিছুদিন দেশের ক্ষমতায় থাকতে পারলে, স্বাধীন বাংলাদেশকে দেউলিয়া ঘোষণা করিয়ে ছাড়তো। আর এই সুযোগে ভারত বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশকে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্যে পরিণত করতো।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক বা ক্ষমতার বাইরে থাকুক, তারা সমানতালে মানুষ হত্যা করে। মানুষ হত্যা আওয়ামী লীগের পুরানো ইতিহাস। ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার নির্দেশে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এখন চোর অপবাদে মানুষ হত্যা করে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রলীগ উঠে পড়ে লেগেছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আটক ৫ জনের মধ্যে চারজনই ছাত্রলীগের। সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।