প্রায়ই বিভিন্ন ভাইরাল ইস্যু নিয়ে ফেসবুক লাইভে কথা বলতেন সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। এবার আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় নিজের গ্রেফতারের খবরটিও ফেসবুকে জানিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মিরপুর মডেল থানার বিস্ফোরক ও হত্যা চেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) মধ্যরাতে ব্যারিস্টার সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু আন্দোলনের সময় মিরপুর মডেল থানা ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেয়ার কারণে ব্যারিস্টার সুমনকে আপাতত পল্লবী থানায় রাখা হয়েছে।
গ্রেফতার হবার আগে সোমবার দিবাগত রাত ১টা ১৮ মিনিটে নিজের ফেসবুক একাউন্টে সুমন লেখেন, ‘আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই।’
পরে নিজের পেজ থেকে ১টা ৪২ মিনিটে একটি ভিডিও বার্তাও দেন তিনি। ২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে তিনি জানান, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অনেকের মতো তিনি দেশত্যাগ করেননি। তিনি বলেন, আমি দেশেই আছি, ঢাকা শহরেই আছি। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে আমি নিজের অবস্থান একটু গোপন রেখেছি।
ভিডিও বার্তায় ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, দেশ সংস্কারে কাজ করার সুযোগ পেলে আমি কাজ করবো। সংস্কারের অংশ হিসেবে এখন যাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, এরকম অনেকের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছিলাম। এর শুরুটা আমিই করেছিলাম।
এসময় সংসদ সদস্য হিসেবে পাওয়া স্বল্প সময়কে দেশের মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছেন বলে দাবি করেন ব্যারিস্টার সুমন। রাজনৈতিক ক্ষমতাকে ব্যবহার করে অনৈতিক কোনো কাজের সাথে যুক্ত হওয়া কিংবা অবৈধ সম্পদ গড়েননি বলেও দাবি করেন সুমন।
তিনি আরও জানান, আমার নামে কোনো মামলা হলে আমি যেহেতু আইনজীবী, তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আমার আছে। আমি আইনের মাধ্যমেই আমি সেটি মোকাবেলা করবো।
গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ব্যারিস্টার সুমন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মনােনয়ন পাননি সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে পরাজিত করে হবিগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান।
গত ২০ আগস্ট অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিওবার্তায় দুঃখ প্রকাশ করেন ব্যারিস্টার সুমন। ওই সময় ভিডিওতে তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি। তিনি দাবি করেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিলেন।