21 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

পদ্মা সেতুর সুত্রে প্রেম, মুন্সিগঞ্জের ইতি ও চীনের চান একই সুতায় ৫ বছর

মুন্সীগঞ্জের ইতি আক্তার ও চীনের চান চিয়াসিং। কোনো এক দিন দুজনের অজান্তেই হৃদয়ে আছড়ে পড়ে পদ্মার ঢেউ। এরপর সঙ্গোপনে রচনা করতে শুরু করেন প্রেমের এক নতুন মানচিত্র। দেশ, সংস্কৃতি ও ভাষার সীমানা টপকে যে মানচিত্রে ফুটে ওঠে একটাই রেখা—ভালোবাসা।

ইতি ও চানের প্রেমের গল্পের শুরু পদ্মার পাড়েই। সালটা ছিল ২০১৭, তখনও তৈরি হয়নি পদ্মা সেতু। সেতু না থাকলেও কাজের সুবাদে দুজনের জানাশোনা ছিল বেশ। মূলত দুজনই পদ্মা রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্প ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সি আর ইসির কর্মী।

চান চিয়াসিং বলেন, আমার বউ অনেক ভালো মানুষ, অনেক সোজা মানুষ, ঠান্ডা মানুষ ।আমি তাকে খুব ভালোবাসি’।

ইতি আক্তার বলেন, আমার হাজবেন্ড আমাকে এতো বেশি ভালোবাসছে, আমার জন্য অনেক কিছু করছে , আমাকে ইমপ্রেস করার জন্য, একসঙ্গে থাকার জন্য। ওর ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়ে আমি ওকে ভালোবেসেছি।

আরও পড়ুনঃ  মঙ্গলবার সব সরকারি অফিসসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা

কাজের সুবাদে প্রথম দিকে কথা হতো অনলাইনে। ফোন নম্বর দেওয়া-নেওয়ার পর্ব চুকে গেলে শুরু হয় দীর্ঘ আলাপচারিতা। এক পর্যায়ে চান ইতিকে জানান নিজের ভালোলাগার কথা, ভালোবাসার কথা।

ইতি আক্তার বলেন, ‘উইচ্যাট থেকেই আমাদের কথা বলা শুরু।এরপর ফোনেও কথা হতো। তারপর বেশিরভাগ সময় আমাদের এখানেই থাকতে হতো। সেভাবেই আমাদের সম্পর্কের শুরু’।

চীনা জামাই চান চিয়াসিং বলেন, ‘আমি যখন ফ্রি থাকতাম তখনই তাকে মেসেজ দিতাম। মাঝেমাধ্যে কথা বললাম, দেখা করতাম। প্রায় প্রতিদিনই দেখা করতাম। এভাবেই আমাদের সম্পর্কের শুরু’।

চাপা উত্তেজনায় ভরপুর প্রেমের সফল পরিণতি ঘটে ২০১৮ সালের ৯ মে। কারণ ওই দিনই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। তবে বরাবরের মতোই মেয়ের পরিবারের মন জয় করতে পরীক্ষা দিতে হয়েছে চানকে।
ইতি আক্তার বলেন, ‘ও আমার বাড়িতে আসে। আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে । যেহেতু আমাদের ধর্ম আলাদা, সেহেতু ও সিদ্ধান্ত নেয় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার। এরপর ইসলাম ধর্ম মতে আমাদের বিয়ে হয়’।

আরও পড়ুনঃ  ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র বন্ধ থাকবে আজ

একপর্যায়ে পরিবার মেনে নিলে, শুরু হয় সুখের সংসার। প্রতিষ্ঠানে দিনের বেশিরভাগ সময় পার হলেও সময় পেলে তারা ছুটে যান নিজেদের গড়ে তোলা স্বপ্নের বাড়িতে। ইতির পরিবারের সঙ্গে বেশ ভালো সময় কাটছে চানের।

চান চিয়াসিং জানান,আমার শ্বশুর শাশুড়ি অনেক ভালো। সে আমাকে তার ছেলের মতো দেখে।আমাকে অনেক ভালোবাসে’।

এদিকে চীনা শ্বশুর শাশুড়ির আপ্যায়নে ইতিও মুগ্ধ।
ইতি বলেন, ‘আমি ওর বাবা মায়ের সঙ্গে দেখা করতে চীনে যাই। সেখানকার রিচুয়াল মেনে আমাকে বরণ করে। আমি যখন ওর বাসার গেটে গেলাম, এতো আতশবাজি ফুটিয়েছিল আমি অবাক হয়েছিলাম। আমাকে অনেক খুশি মনে বরণ করেছিল’।

আরও পড়ুনঃ  টিকটকার প্রিন্স মামুনের জামিন

দিনে দিনে সংসারের বয়স হলো পাঁচ বছর। হাসি-আনন্দ আর পদ্মার মৃদুমন্দ হাওয়ার মতো খুনসুটিতে কেটে যাচ্ছে ঝলমলে সব দিন।

একসঙ্গে গল্প-আড্ডার ফাঁকে দুজনে মিলে রান্না করেন পছন্দের খাবার।
কদিন পর স্বামীর সঙ্গে চীনে পাড়ি দেবেন ইতি। তবে যে পদ্মার তীরে রচিত হয়েছিল তাদের মিষ্টি প্রেমগাথা, সেই অমোঘ স্রোতের টানে বাংলার কোলে আবার ফিরে আসতে চান দুজনই। চান জানালেন, কোনো একসময় বাঙালি বধূকে নিয়ে বাংলাদেশেই থিতু হতে চান তিনি।

#lovestory #ChinaBangladesh #crecbangladesh

সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ