Monday, March 24, 2025

ছাত্রশিবির এখানে কেন— প্রশ্ন তুলে সভায় ছাত্রদল-বামদলগুলোর হট্টগোল

আরও পড়ুন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন সামনে রেখে মতবিনিময় সভায় ছাত্রশিবিরের নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এতে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে হট্টগোল দেখা দেওয়ায় সভাটি স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে এই সভা শুরু হয়। সভার শুরুতে পরিচয়পর্ব চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের অনুপস্থিতির কারণ দেখিয়ে সভাটি স্থগিত ঘোষণা করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ।

সভায় অংশ নেওয়া ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জানান, এটি ছিল জাকসু নির্বাচন সামনে রেখে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার মতবিনিময় সভা। পরিচয়পর্বের সময় ছাত্রশিবিরের পাঁচজন নেতা-কর্মী নিজেদের পরিচয় দিলে ছাত্রদলের কর্মী মো. শরীফ সভায় তাদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানান, শিবির থাকলে কয়েকটি সংগঠন সভায় থাকবে না। এর পরপরই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুনঃ  নতুন বউ রেখে রোজগারের জন্য জাহাজে গিয়েছিলেন সজিবুল, ফিরলেন লাশ হয়ে

উত্তেজনার একপর্যায়ে বামপন্থী, ছাত্রদলসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সভা থেকে বেরিয়ে যায় এবং শিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে মিছিল শুরু করে। একই সময়ে জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলনসহ অন্য কিছু দলের নেতা-কর্মীরা ছাত্রদল ও বামদলগুলোকে ‘বাকশাল ও মুজিববাদের সহযোগী’ বলে স্লোগান দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করে।

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সংগঠক সজিব আহমেদ বলেন, জাবিতে কবির হত্যার ঘটনায় ২২টি ছাত্রসংগঠন মিলে ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। তারা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিত। আমরা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে বসে আলোচনা করতে চাই না। তাই সভা বর্জন করেছি। কিন্তু আজকে আমাদের উদ্দেশ্যে কয়েকটি ব্যানারের লোকজন বাকশাল ও মুজিববাদের সহযোগী বলে স্লোগান দিয়েছেন। আমরা তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা গত ১৬ বছর কোথায় ছিলেন? আমরা তো রাজপথে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছি।

আরও পড়ুনঃ  দু’পক্ষের সমঝোতা না হলে ইজতেমার অনুমতি বাতিল বিশ্ব ইজতেমা

জাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি হারুনুর রশীদ রাফি বলেন, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের লক্ষ্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিনির্মাণ। কোনো প্রকার আইনের তোয়াক্কা না করে ফ্যাসিবাদী কায়দায় কোন ছাত্র সংগঠনের অধিকারকে হরণ করে নেওয়া হবে না। প্রত্যেক রাজনৈতিক সংগঠন তার মতামত প্রকাশের অধিকার পাবে, ছাত্র সংসদের বৈধ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে গণতান্ত্রিক চর্চাকে সমুন্নত রাখবে। আমরা সেই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিনির্মাণের অগ্রসৈনিক হিসেবে ছাত্র সমাজের কাছে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে চাই।

আরও পড়ুনঃ  হাত তুলে হাসপাতালে নেওয়ার আকুতি জানিয়েছিলেন তৌফিক

তিনি আরও বলেন, কোন রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক অধিকার নিয়মবহির্ভূতভাবে ফ্যাসিবাদী কায়দায় বিরত রাখার হীন চেষ্টাকে ফ্যাসিবাদের ধারাবাহিকতা বলেই মনে করি।সকল বৈধ ছাত্র সংগঠনের কাছে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক আচরণ এবং প্রশাসন পূর্বের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে ব্যর্থতা থেকে বের হয়ে আসবে বলে আশা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রশাসন অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, উপাচার্য অসুস্থতার কারণে আজকের সভায় উপস্থিত না থাকায় সভা মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তারিখ ঘোষণা করে আবারও বসা হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ