Sunday, April 27, 2025

ভারতে মসজিদ নিয়ে তিন মুসলিমকে গুলি করে হত্যা, ঘটনার পেছনে কী?

আরও পড়ুন

ভারতে মসজিদ নিয়ে তিন মুসলিমকে গুলি করে হত্যা, ঘটনার পেছনে কী?
ভারতের উত্তরপ্রদেশের সামভালে মুঘল আমলের একটি মসজিদকে নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আজ রোববার সকালে মসজিদটিতে জরিপ চালাতে এসেছিল একটি জরিপকারী দল। তাদের সঙ্গে ছিল পুলিশ।

কিছু হিন্দুত্ববাদী ব্যক্তি দাবি করেছেন, মসজিদটি যেখানে তৈরি করা হয়েছে সেখানে আগে একট মন্দির ছিল। সত্যিই সেখানে মন্দির আছে কিনা সেটি জানতে তারা আদালতে পিটিশন দায়ের করেছিল। এরপর আদালত মসজিদে জরিপ চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু রোববার সকালে যখন জরিপকারী দল জরিপ চালাতে আসে তখন তাদের বাধা দেন মুসল্লিরা, জরিপকারীদের ওপর ইটপাটকেলও ছুড়ে মারেন তারা। ওই সময় পুলিশ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করে।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে অর্ধেক, কলকাতার ব্যবসা খাতে বড় ধাক্কা

মসজিদের জায়গায় মন্দির থাকার ব্যাপারে কী বলছে হিন্দুত্ববাদীরা?

এই মসজিদ ঘিরে উত্তেজনা গত কয়েকদিন ধরেই চলছে। আদালতের নির্দেশে গত মঙ্গলবার প্রথমবার সেখানে জরিপ চালানো হয়। ওইদিনও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

যেসব হিন্দুত্ববাদী আদালতে পিটিশন দায়ের করেছে তারা বলছে, এই মসজিদের জায়গায় এক সময় হরিহর মন্দির ছিল। সবমিলিয়ে আটজন এমন দাবি করে পিটিশনটি দায়ের করেন। যারমধ্যে আছেন অ্যাডভোকেট হরি শঙ্কর জৈন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন।

হরি শঙ্কর এবং বিষ্ণু শঙ্কর নামের এই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে উস্কানি তৈরির অভিযোগ আগে থেকেই রয়েছে। তারা সম্পর্কে বাবা-ছেলে। এ দুজন জ্ঞানবাপী মসজিদ-কাশি বিশ্বনাথ মন্দিরের বিষয়টি নিয়েও উস্কানি তৈরি করেছিলেন।

আরও পড়ুনঃ  পুলিশের হাতে কামড় দিয়ে পালানো সেই আসামি গ্রেপ্তার

তাদের দাবি সামভালের মুঘল আমলের জামে মসজিদটি তৈরির আগে সেখানে শ্রী হরিহর মন্দির ছিল। দেবতা কল্কিকে উৎস্বর্গ করে এটি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু জামে মসজিদ কর্তৃপক্ষ এখন জোরপূর্বক মন্দিরের জায়গাটি মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা আরও দাবি করেছে, সামভাল হলো একটি ঐতিহাসিক স্থান। যেটির সঙ্গে হিন্দু ধর্মগ্রন্থের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, এখানে দেবতা কল্কির পুনরুত্থান ঘটবে।

গোপাল শর্মা নামের এক আইনজীবী যিনি আদালতে হিন্দুদের পক্ষে কাজ করছেন; তিনি বার্তাসংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, পিটিশনে তারা বাবুরনামা এবং আইন-ই-আকবরের মতো ঐতিহাসিক গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত দিয়েছেন। যেগুলোতে উল্লেখ আছে বর্তমান জামে মসজিদটি হরিহর মন্দিরের ওপর তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেছেন, ১৫২৯ সালে সম্রাট বাবুর মন্দিরটি ভেঙে ফেলেন।

আরও পড়ুনঃ  সীমান্ত এলাকায় আরাকান আর্মি, কী প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশে?

তবে সেখানকার স্থানীয় রাজনীতিবিদ এবং সমাজবাদী পার্টির এমপি জিয়াউর রহমান এই দাবি অসত্য বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই জামে মসজিদটি অনেক পুরোনো। এছাড়া ১৯৯১ সালের আদালতের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। যে রায়ে বলা হয়েছিল ১৯৪৭ সালের আগে ধর্মীয় স্থাপনাগুলো যেমন ছিল তেমনই রাখতে হবে।

সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেছেন, হিন্দুত্বাবাদী বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে সেখানে উস্কানি তৈরি করেছে। যেন সেখানকার উপনির্বাচন ঘিরে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে সেটি থেকে মানুষের নজর সরে যায়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ