Friday, March 21, 2025

১৪০ দিন পর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ নাঈমের মরদেহ উত্তোলন

আরও পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরের হাকিমপুরে আগুনে পুড়ে মোহতাসিম হাসান ফাহিম ওরফে নাঈম (১৮) নামে নিহত এক শিক্ষার্থীর মরদেহ দাফনের ১৪০ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

এসময় জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম, জয়পুরহাট জেলা কারাগারের চিকিৎসক মো. শাহ আলম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিনাজপুরের হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজন মিয়া জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলামসহ নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

নিহত মোহতাসিম হাসান ফাহিম ওরফে নাঈম জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক মণ্ডলের ছেলে। নাঈম হাকিমপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের মানবিক বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন।

আরও পড়ুনঃ  আগরতলায় বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ

মামলা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে দিনাজপুরের হাকিমপুর পৌর শহরে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের নির্দেশে হাকিমপুর উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হিলি রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের নিচে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে কয়েকজনকে মারধর করতে করতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। পরে সূর্য ও নাঈমকে পৌর মেয়র জামিল হোসেনের বাড়িতে টর্চার সেলে নিয়ে যান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ফলে সেখানে সূর্য ও নাঈমের মৃত্যু হয়। পরে আসামিরা এ দু’জনের লাশ গুম করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে গভীর রাতে আটকে থাকা তরুণেরা কৌশলে পৌর মেয়রের বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

আরও পড়ুনঃ  প্রবাসীর বাড়ি দখলের অভিযোগ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে

ওই তরুণেরা বিষয়টি সূর্যের পরিবারকে জানায়। তখন তার বড় ভাই মো. সুজনসহ স্থানীয় লোকজন পৌর মেয়রের বাড়িতে গিয়ে নূর ও নাঈমের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান। সেখানে থাকা বাড়ির লোকজন ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নিহত দু’জনের অবস্থান বলেননি এবং তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি। পরদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নিহত এ দু’জনের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌর মেয়র জামিল হোসেনের বাড়ি থেকে সূর্য ও নাঈমের মরদেহ উদ্ধার করে। পরেরদিন তাদের মরদেহ নিজ নিজ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  শেখ হাসিনাকে ভারত কি ফেরত পাঠাবে, আলজাজিরার প্রতিবেদন

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজন মিয়া বলেন, নিহত নাঈমের মরদেহ সেসময় ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল। পরে নিহত আসাদুজ্জামান নূর ওরফে সূর্যের বড় ভাই মো. সুজন বাদী হয়ে দুইজন নিহত হওয়ার ঘটনায় হাকিমপুর থানায় মামলা করেন। মামলার পর আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ আজ উত্তোলন করা হয়েছে।

জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উত্তোলনের সময় তার পরিবার সহযোগিতা করেছে। মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ