থার্টি ফার্স্ট নাইটে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাতভর অভিযান চালায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অভিযান চলাকালে সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন জলির বোরকা ও পোশাক নিয়ে কটূক্তি করেছেন শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি এবং ইতিহাস বিভাগের ৩৯ ব্যাচের (২০০৯-২০১০ সেশন) শিক্ষার্থী নবীনুর রহমান নবীন।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (০১ জানুয়ারি) রাত ১০ টায় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রক্টরিয়াল বডি টহল দেয়ার সময় ৮-১০ জনের একটি প্রাইভেট কারে করে যাচ্ছিলো। তাদের থামিয়ে জিজ্ঞেসাবাদ করা হলে একজন মেয়ে নিজেকে ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসাবে পরিচয় দেন। এ সময় জাবি ছাত্রদল নেতা নবীন এসে মেয়েটিকে চলে যেতে বলেন। তখন সহকারী নারী প্রক্টর তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তিনি সহকারী প্রক্টরের কাছে তেড়ে এসে দুর্ব্যবহার করেন এবং রূঢ় ভাষায় কথা বলেন।
এ সময় ছাত্রদল নেতা সহকারী প্রক্টরের পোশাক নিয়ে কটূক্তি করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। ছাত্রদল নেতা নবীন সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন জলির বোরকা, হাত মোজাসহ পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাবির সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন জলি বলেন, আমরা দায়িত্ব পালন করছিলাম। একজন ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ি চালাচ্ছিল। আমরা ক্যাম্পাসে এটি আপাতত নিষেধ বলে বুঝানোর চেষ্টা করছিলাম। তখন নবীন এসে তাদের চলে চেতে বলে। আমি খুবই নমনীয় ভাষায় তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে আমার সাথে কথা বলেন। আমার পোশাক নিয়ে কটূক্তি করেন। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে কেন পোশাক নিয়ে হেনস্তার শিকার হতে হবে? নতুন স্বাধীনতার পর এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত।
অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতা নবীনুর রহমান নবীন বলেন, আমরা কয়েকজন হাঁটছিলাম তখন দেখলাম একটি গাড়িয়ে থামিয়ে জিজ্ঞসাবাদ করা হচ্ছে এবং একজন শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা হচ্ছে। আমি ক্যাম্পাসের সাবেক একজন শিক্ষার্থী হিসেবে সেখানে কথা বলছিলাম পরিস্থিতি ঠিক করার জন্য। আমরা সবাই মিলেই তো ক্যাম্পাসকে নিরাপদ রাখবো তাইনা? সাবেক হয়েছি বলে কি থার্টিফার্স্ট নাইটে নিজেদের মতো ঘুরতে পারি না? আগে তো আমরা সবাই মিলে ঘোরাঘুরি করতাম। আমরা তো ক্যাম্পাসে কোন অপকর্ম করতে আসিনি, আমাদের গাড়ির কাগজপত্র দেখিয়েছিলাম সেখানে। সে সময় আমি বলি তাহলে কি আমরা বোরকা পড়ে বসে থাকবো নাকি এবং এটি আমি তাকে উদ্দেশ্য করে বলি নাই বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আমার সহকর্মী (ভুক্তভোগী নারী সহকারী প্রক্টর) যদি লিখিতভাবে অভিযোগ জানান তাহলে এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।