Thursday, February 13, 2025

টিউলিপের বিরুদ্ধে বেরিয়ে আসছে আরও অভিযোগ

আরও পড়ুন

যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বেরিয়ে আসছে একের পর এক অভিযোগ। আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পাওয়া, বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতি, নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগের নেতাদের কাজে লাগানো, গুম হওয়া আইনজীবীর স্ত্রীকে হেনস্তা করানোর পর এবার তাঁর বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন করায় টিউলিপ ওই সাংবাদিককে হুমকি দেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। ২০১৭ সালের সেই ভিডিওটি পোস্ট করে সংবাদ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।

বর্তমানে টিউলিপ ইস্যুতে সরগরম দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ডাউনিং স্ট্রিট। বিশেষ করে তিনিই দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় আলোচনা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। এ অবস্থায় তাঁর পদত্যাগের দাবি উঠেছে। ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এ মন্ত্রী পদত্যাগে বাধ্য হলে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে কয়েকজন প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত তালিকাও করেছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। টিউলিপ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার। দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব তাঁর। তিনি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

আরও পড়ুনঃ  ইরানি মুদ্রার ইতিহাসে রেকর্ড দরপতন, ডলারের বিপরীতে রিয়ালের দাম পৌনে ৮ লাখ!

ভিডিওতে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিখোঁজ হওয়া ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আইনজীবী ব্যারিস্টার আরমানের মামলা সম্পর্কে টিউলিপকে জিজ্ঞাসা করেন ওই সাংবাদিক। জবাবে সাংবাদিকের উদ্দেশে টিউলিপকে বলতে শোনা যায়, ‘খুব সতর্ক থাকুন।’

টিউলিপ হুমকির সুরে বলেন, আমি হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নের একজন লেবার এমপি। আমি একজন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য। খুব সাবধান থাকবেন। আমি বাংলাদেশি নই এবং আপনি যার কথা বলছেন, তাদের মামলা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। আমার বক্তব্য এখানেই শেষ।

চলে যাওয়ার সময় টিউলিপ অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিক ও প্রডিউসার ডেইজি আইলিফকে বলেন, এখানে আসার জন্য ধন্যবাদ ডেইজি। আশা করি, তোমার সন্তান ভালোভাবে হবে। কারণ, প্রসব খুবই কঠিন। দেখা হবে।

আরও পড়ুনঃ  হামাসের সেই হামলা নিয়ে ‘পদত্যাগপত্রে’ যা লিখলেন ইসরাইলের গোয়েন্দাপ্রধান

এর পরই তাঁর একজন সহকারী ক্যামেরার সামনে হাত দেন এবং সাংবাদিকদের ভিডিও ধারণ বন্ধ করতে বলেন। ওই সহকারী প্রশ্নগুলোকে অপ্রাসঙ্গিক ও বেপরোয়া মন্তব্য করে সাংবাদিকদের টিউলিপের কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আইলিফ গত সপ্তাহে এক্সে একটি পোস্টে তাঁর অভিজ্ঞতা পুনরায় শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, যখন আমি ২০১৭ সালে টিউলিপকে বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক যোগসূত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করি, তখন তিনি আমাকে ‘সতর্ক থাকতে’ বলেন। এ ঘটনার পর তিনি ব্রডকাস্টিং নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফকম, পুলিশ এবং আমার অফিসের বসদের কাছে অভিযোগ করেন। যদিও কোনো অভিযোগ টিকেনি। কারণ, সৌভাগ্যবশত সেখানে যা ঘটেছিল তা ক্যামেরায় রেকর্ড করা হয়েছে। যদি তা না হতো, তাহলে তিনি আমার চাকরি খোয়াতেন।

টিউলিপ পরবর্তী সময় তাঁর ক্ষমতা ও প্রশাসন ব্যবহার করে আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করান বলে অভিযোগ রয়েছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে গুম হওয়া আইনজীবী ব্যারিস্টার আরমান বলেন, ইন্টারভিউর পর চ্যানেল-৪ প্রতিবেদনটি প্রচার করার কয়েক ঘণ্টা আগেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমার বাড়িতে যায়। আমার স্ত্রীকে চুপ থাকতে বলে। বাইরের দেশের কার কার সঙ্গে আমার স্ত্রীর যোগাযোগ আছে– এ ব্যাপারে প্রশ্ন করে। তাঁকে এমনভাবে হেনস্তা করে, যেন কোনো সন্ত্রাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  নির্বাচনে জিতেই লুটিয়ে পড়লেন অভিনেত্রী সায়নী

এদিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে টিউলিপের ওপর চাপ অব্যাহত রয়েছে। তাঁর খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের থেকে পাওয়া ফ্ল্যাটের বিষয়টি ট্যাক্স, পেমেন্ট অ্যান্ড কাস্টমস অথরিটিকে (এইচএমআরসি) তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে বিরোধী দল। ছায়া মন্ত্রিপরিষদ অফিসের মন্ত্রী অ্যালেক্স বার্গহার্ট প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, এইচএমের তদন্তকারীদের সম্পত্তিগুলো খতিয়ে দেখা উচিত। বাড়িগুলোর কর ঠিকমতো পরিশোধ করা হয়েছে কিনা, তা কর্মকর্তাদের নিশ্চিত হওয়া উচিত।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ