রাজধানীর বাজারে চালের দাম কমছে না। এ ছাড়া দুই তিনটি পণ্য ছাড়া অন্যান্য সব ধরনের সবজির ও বেশির ভাগ পণ্যের দাম নিম্নমুখী। দর কমায় খুশি ভোক্তা। বাজারে রমজানের প্রথম দিন সেঞ্চুরি করেছিল বেগুন। যদিও তা এখন কিছুটা কমে ৮০’র ঘরে এসে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে এখনো প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।
চালের বাজারে এখনো অস্বস্তি রয়ে গেছে। আমদানি শুল্ক কমালেও ভোক্তা সেই সুফল পাচ্ছেন না; বরং কোনো কোনো চালের দর বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। এক মাস ধরে এ দরেই রয়েছে মোটা চাল। গত এক মাসে মাঝারি ও সরু চাল কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। বর্তমানে মাঝারি চাল ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা ও সরু চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া গত বছর উত্তাপ ছড়ানো পিয়াজের ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। খুচরা পর্যায়ে দেশি ভালোমানের প্রতি কেজি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪৫ টাকায়। যেখানে গত বছর এসময় বাজারে প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হয়েছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। একইভাবে আলুর দাম অর্ধেক কমে এখন ২০-২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে পণ্যের দামে স্বস্তির কথা বলছেন অনেক ক্রেতা। হাসান নামে একজন বলেন, রমজান হিসেবে বাজারে আগে যে হুলস্থুল পরিস্থিতি থাকতো সেটা এবার নেই। বেশির ভাগ পণ্যের দাম নাগালের মধ্যে।
বাজারে ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, ক্ষীরা ৫০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, পটোল ১২০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি প্রতি পিস ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০, গাজর প্রতি কেজি ৩০ টাকা, কাঁচাকলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, টমেটো ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। জালি কুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, আলু প্রতি কেজি ৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ভালো লেবু প্রতি হালি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় এবং ধনেপাতা প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা জাহিদুল বলেন, এখন মৌসুম নয় এমন তিন-চার আইটেমের সবজির দাম বর্তমানে বেশি। তবে এখন সব ধরনের সবজির দামই কম যাচ্ছে। যেসব সবজির মৌসুম না সেগুলো ১০০ থেকে ১২০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাকি সব সবজি বিশ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে রয়েছে। রমজানের জন্য শুধুমাত্র বেগুন আর লেবুর দাম বেশি। টমেটো ২০ টাকা কেজি বাকি অন্য সব সবজিগুলো ৫০ টাকার মধ্যে।
এদিকে রোজা শুরুর কারণে গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে ২২০ টাকায় উঠেছিল। এখন আবার কমে ২০০ টাকার মধ্যে এসেছে। পাশাপাশি ডিমের বাজারও নিম্নমুখী। প্রথম রোজায় ফার্মের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা দরে। ডজনে ১০ টাকা কমে গতকাল বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা দরে। তবে মহল্লার দোকানে কেউ কেউ ডজনে ৫ টাকা বেশি রাখছেন।
এদিকে মোটাদাগে বলতে গেলে এ বছর পবিত্র রমজানে পণ্যের দাম অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে মুদি পণ্যের দাম। রোজা শুরুর আগেই বাজারে অরাজকতা এবার দেখা যায়নি। তবে চালের দাম বাড়তি রয়ে গেছে, সেটা অবশ্য কমেনি। এ বছর এখন পর্যন্ত চিনি, খেজুর, ডালের দাম কম রয়েছে।