নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের দুই দিন পর ধনু নদী থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল ও খালিয়াজুরীর লিপসার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ এ উদ্ধার অভিযান চালায়।
এর আগে শনিবার (৮ মার্চ) খালিয়াজুরীর রসূলপুর ফেরিঘাটে মাছ শিকারি ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে নিখোঁজ হন তারা।
নিহতরা হলেন মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বাগজান গ্রামের মৃত আব্দুল কদ্দুছের ছেলে রোকন মিয়া (৪৮), আটপাড়া উপজেলার রূপচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে শহিদ মিয়া (৫০) ও কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ী গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে হৃদয় মিয়া (২৮)।
এ ছাড়া মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের ইয়াসিন মিয়া (১৯) নামের আরো একজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
ঘটনার পর থেকেই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সোমবার সকাল থেকে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, শনিবার (৮ মার্চ) সকালে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে রসুলপুর ঘাট এলাকায় ইজারাকৃত বিলে মাছ ধরতে আসলে স্থানীয়দের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়।
পরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে দুই গ্রুপের শতাধিক লোকজন আহত হয়। এ সময় মৎস্য শিকারিদের শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর ও কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থল থেকে ৫১ জনকে আটক করে খালিয়াজুরী থানা পুলিশ।
রবিবার আটককৃতদের স্বজন এবং নেতাকর্মীদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষের পর ৪ জন নিখোঁজ হলে সোমবার ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম লিডার নুরুল আলম খান বলেন, ‘৫ জনের একটি ডুবুরিদল সোমবার নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর ধনু নদী থেকে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকাজ সমাপ্ত করে আমরা মদন উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে অবস্থান করছি। ময়মনসিংহ কন্ট্রোল থেকে জানানো হয়েছে, আরেকটি মরদেহ নদীতে ডুবন্ত অবস্থায় থাকতে পারে।
নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীকাল ফজরের পর থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করা হবে।’
জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গতকাল দুই গ্রুপের লোকজন ঘোষণা দিয়ে মারামারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কোনো ধরনের ঝামেলা হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সোমবার ধনু নদী থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরিদল। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’