Sunday, June 1, 2025

ট্রাম্পের ফোনেও ইউক্রেনে পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেন না পুতিন

আরও পড়ুন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেনে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধ বন্ধে উভয় নেতা দীর্ঘসময় ফোনে কথা বললেও ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হননি পুতিন।

তবে সাময়িকভাবে ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর আক্রমণ অপাতত বন্ধ করতে সম্মত হয়েছেন রুশ এই প্রেসিডেন্ট। বুধবার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ফোনালাপে ইউক্রেনে তাৎক্ষণিক এবং পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে তিনি কেবল ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর আক্রমণ বন্ধ করতে সম্মত হয়েছেন।

এছাড়া সম্প্রতি সৌদি আরবে ইউক্রেনীয়দের সাথে ট্রাম্পের প্রশাসন যুদ্ধবিরতি অর্জনে মাসব্যাপী যে কাজ করেছে তাতেও স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন রাশিয়ান এই প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের সাথে বিদেশি সামরিক সাহায্য এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি বন্ধ হলেই কেবল ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  পুতুলকে ডব্লিউএইচও থেকে অপসারণে অনলাইনে স্বাক্ষর গ্রহণ চলছে, ব্যাপক সাড়া

তবে ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা পূর্বে এই ধরনের শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে। তিন বছরের যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়ান বাহিনী সম্প্রতি ছয় মাস আগে ইউক্রেনের দখলকৃত কুরস্ক অঞ্চলের বেশ কিছু অঞ্চল পুনরুদ্ধার করছে।

মঙ্গলবারের ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপের এই ফলাফল এক সপ্তাহ আগে মার্কিন অবস্থান থেকে পিছু হটার সমান, যদিও মধ্যপ্রাচ্যে অবিলম্বে আরও শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে বলে দুই নেতা একমত হয়েছেন।

গত মঙ্গলবার জেদ্দায় মার্কিন প্রতিনিধিদল ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের সাথে দেখা করে কিয়েভকে স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে “অবিলম্বে” ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হতে রাজি করায়। এরপর যুত্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর।

আরও পড়ুনঃ  জানা গেল রাশিয়ান তরুণীর সঙ্গে কক্সবাজারে কী ঘটেছিল

এদিকে মঙ্গলবার ট্রাম্প ও পুতিনের ফোনালাপ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কিতে সরকারি সফরে পৌঁছান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেন, জ্বালানি অবকাঠামো হামলা না করার মতো যুদ্ধবিরতির ধারণার জন্য ইউক্রেন উন্মুক্ত, তবে প্রথমে আরও বিস্তারিত জানতে চান তিনি।

পরে তিনি পুতিনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ড্রোন হামলার পর যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করার অভিযোগ করেন। ইউক্রেনের এই নেতা বলেন, যেসব স্থানে হামলা চালানো হয়েছে তার মধ্যে সুমির একটি হাসপাতাল এবং স্লোভিয়ানস্কে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাও রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, বিশেষ করে বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ পুতিন কার্যকরভাবে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।”

আরও পড়ুনঃ  যুক্তরাষ্ট্রে আসামি ধরতে গিয়ে বন্দুক হামলায় ৪ পুলিশ নিহত

ট্রাম্প অবশ্য এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের সাথে তার ফোনালাপ “খুব ভালো এবং ফলপ্রসূ” হয়েছে এবং “শান্তি চুক্তির অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে”।

ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা সমস্ত জ্বালানি ও অবকাঠামোর ওপর তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছি, এই বোঝাপড়াকে সাথে নিয়ে আমরা দ্রুত একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি এবং শেষ পর্যন্ত রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এই ভয়াবহ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কাজ করব।”

বিবিসি বলছে, ইউক্রেনের প্রায় ৮০ শতাংশ জ্বালানি অবকাঠামো রাশিয়ান বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জেলেনস্কি গত সেপ্টেম্বরে জানিয়েছিলেন। এর জবাবে রাশিয়ান ভূখণ্ডের গভীরে তেল ও গ্যাস স্থাপনাগুলোতেও ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে ইউক্রেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ