Friday, January 17, 2025

সৎমায়ের নির্মমতায় প্রাণ গেল ছোট্ট মিমের

আরও পড়ুন

এবার গাজীপুরের কালিয়াকৈরে নিখোঁজের সাত ঘণ্টার পর শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ মে) বিকেলে উপজেলার হরিণহাটি এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুর নাম মিম আক্তার (৮)। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার গাবামাসি গ্রামের সবুজ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর মেয়ে। সে বাবা-মায়ের সঙ্গে কালিয়াকৈর উপজেলার হরিণহাটি এলাকার সোজাবর আলীর ভাড়া বাসায় থাকত।

জানা যায়, বুধবার সকাল ১০টার দিকে মিম হঠাৎ নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। বিকেল ৫টার দিকে সন্দেহ হলে মিমের দাদা কুদ্দুস মিয়াসহ কয়েকজন মিলে ওই শিশুর সৎ মা আয়নার ঘরে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই ঘরের সানসেটে কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে রাখা অবস্থায় শিশু মিমের নিথর দেহ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনঃ  জাবিতে শিবিরের মাসব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি

এরপর পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যা শিশু মিমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় জড়িত সৎমা আয়না আক্তারকে (২৭) আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সবুজ মিয়া গত প্রায় ১০ বছর আগে কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালা এলাকার আব্বাস আলীর মেয়ে নাসিমা আক্তারকে বিয়ে করেন। তারা উপজেলার হরিণহাটি এলাকার সোজাবর আলীর ৬তলা ভবনের তৃতীয় তলায় একটি কক্ষ ভাড়া করে প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনই স্থানীয় পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

মিম নামের তাদের মেয়ে সন্তান রয়েছে। চাকরি করার সময় আয়না আক্তারের সঙ্গে পরিচয় ও পরে প্রেমের সম্পর্কের জেরে তাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন সবুজ। দ্বিতীয় স্ত্রীও একই ভবনের পঞ্চম তলায় ভাড়া থাকেন। তাদের সংসার জীবনে মায়শা আক্তার নামে ৮ মাসের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  টোল প্লাজায় বাস চাপা: চালকের দোষ স্বীকারোক্তি, মালিক কারাগারে

গত কয়েক দিন ধরে পারিবারিক বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে সবুজ মিয়ার ঝগড়া হয়। বুধবার সকাল থেকে সবুজ মিয়ার প্রথম সংসারের মেয়ে মিম আক্তারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এলাকায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে মাইকিং শুরু করে।

এত কিছুর মধ্যেও সকাল থেকে দ্বিতীয় স্ত্রী আয়নাকে দেখতে না পেয়ে একই ভবনের প্রতিবেশীরা আয়নার খোঁজ করেন। তারা আয়নার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ভেতরে আয়নাকে বসে থাকতে দেখেন। এতে এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করলে আয়না ঘরের দরজা খুলে দেন।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা কলকাতার ব্যবসায়ীদের

পরে প্রতিবেশীরা তার ঘরের সানসেটের ওপরে কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে রাখা শিশু মিমের নিথর দেহ দেখতে পায়। এরপর পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে বুধবার সন্ধ্যায় শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সৎমা আয়না আক্তারকে (২৭) আটক করে পুলিশ।

এদিকে কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) যোবায়ের আহম্মেদ জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সৎ মাকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া ময়নাতদন্তের পর হত্যার সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ