Monday, March 24, 2025

হাত হারানো শিশু নাঈমকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় বহাল

আরও পড়ুন

হাত হারানো শিশু নাঈমকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় বহাল
ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে সাড়ে তিন বছর আগে হাত হারানো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার ১৩ বছর বয়সী শিশু নাঈম হাসান নাহিদকে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ১২ জানুয়ারি ওয়ার্কশপের কাজ করতে গিয়ে তিন বছর আগে হাত হারানো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার ১৩ বছর বয়সী শিশু নাঈম হাসান নাহিদকে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকার ডিপোজিট এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকার ডিপোজিট করে দিতে বলা হয়।

আরও পড়ুনঃ  বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

১০ পছর পর নাঈম হাসান নাহিদ ডিপোজিটের টাকা উত্তোলন করতে পারবে। একইসঙ্গে শিশুটি এইচএসসি পাস না করা পর্যন্ত তাকে প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে দিতে বলা হয়, ভৈরবের নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিককে।

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে সেদিন বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও অ্যাডভোকেট মো. বাকির উদ্দিন ভূইয়া। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তামজিদ হাসান। তারা বিনা পয়সায় শিশুটির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন।

ওয়ার্কশপ মালিকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আইনজীবী আবদুল বারেক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।

আরও পড়ুনঃ  বদলির পর এবার চকরিয়ার সেই ওসি প্রত্যাহার

গত বছরের ৫ ডিসেম্বর শিশু নাঈম হাসানকে ক্ষতিপূরণ দিতে রুলের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।

‘ভৈরবে শিশুশ্রমের করুণ পরিণতি’ শিরোনামে ২০২০ সালের ১ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, তখন নাঈম হাসানের বয়স ১০ বছর। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামে। তার বাবা আনোয়ার হোসেনের পেশা জুতা ব্যবসা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর সময়ে আনোয়ার কর্মহীন হয়ে পড়েন। এ সময় সংসারের চাপ সামলাতে নাঈমকে তার মা-বাবা কিশোরগঞ্জের ভৈরবের একটি ওয়ার্কশপে কাজে দেন। এই ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়েই তার ডান হাতটি মেশিনে ঢুকে যায়। শেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় ডান হাতটি।

আরও পড়ুনঃ  ৬ ব্যাংক পেল সাড়ে ২২ হাজার কো‌টি টাকা রোববার থেকে চাহিদা অনুযায়ী টাকা পাবেন গ্রাহকরা

প্রকাশিত প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শিশুটির বাবা হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে শিশুটিকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনা নিজ কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা দিয়ে অনুসন্ধান করতে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়। আগের ধারাবাহিকতায় রুলের ওপর শুনানি হয়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ