Sunday, January 19, 2025

ভারতীয় হাইকমিশনে বিএনপির দেওয়া স্মারকলিপিতে যা আছে

আরও পড়ুন

ভারতীয় হাইকমিশনে বিএনপির দেওয়া স্মারকলিপিতে যা আছে
ঢাকা: বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। রোববার (০৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বারিধারায় ভারতীয় হাইকমিশনে এ স্মারকলিপি দেয় ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল।

‘পরে আপনার দেশের অতি উগ্রবাদী নেতারা এবং বিশেষ করে কিছু সংবাদমাধ্যম ও মিডিয়া বাংলাদেশের এই গণশত্রু হাসিনা ওয়াজেদকে পুনরায় পুনর্বাসন এবং বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অস্থিতিশীল করার জন্যএকের পর এক অজ্ঞ-অর্বাচীনের মতো কাজ করে যাচ্ছে, যাতে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়, আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের বন্ধুত্ব ছিল হাসিনার সঙ্গে, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়। ’

স্মারকলিপিতে আরও লেখা রয়েছে, ‘হাসিনা এখন বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে উঠেছেন।

একদিকে তিনি বাংলাদেশের ভিন্ন দলমতের মানুষদের ঘরবাড়ি সম্পত্তি জ্বালিয়ে দেয়ার হুকুম দিচ্ছেন, অন্যদিকে যারা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তাদের হত্যা করার হুমকি দিচ্ছেন। ভারতের নিরাপদে আশ্রয়ে থেকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার এই অপচেষ্টা বাংলাদেশের জনগণ ইতিবাচকভাবে নিচ্ছে না।

আরও পড়ুনঃ  নিউ এজ সম্পাদককে হয়রানি: অভিযুক্তকে প্রত্যাহার, এসবির দুঃখপ্রকাশ

‘আপনি জানেন, গত ২ ডিসেম্বর আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে। নৈতিক পদস্খলনের কারণে ইসকন থেকে বহিষ্কৃত সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে উগ্র হিন্দুত্ববাদী হাজার হাজার মানুষ যখন রাষ্ট্রীয় মদদ ও প্রশ্রয়ে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা করছিল, তখন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে আপনার দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ’

‘প্রাপ্ত বিবরণগুলো চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে বিক্ষোভকারীদের প্রাঙ্গণে আক্রমণ করার সম্মতি দেওয়া হয়েছিল। এই প্রক্রিয়ায়, স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা জাতীয় পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে এবং সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরে সম্পত্তিরও ক্ষতি করে। ’

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা কলকাতার ব্যবসায়ীদের

‘দুঃখজনকভাবে, প্রাঙ্গণ রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যদের শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় না থাকতে দেখা যায়। এটি কূটনৈতিক নিয়ম এবং আন্তর্জাতিক আইনের একটি গুরুতর লঙ্ঘন। একইসঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন, ১৯৬১ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এমন ন্যক্কারজনক বিস্ময়কর ঘটনাগুলোর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলেও আপনার সরকারের নীরবতায় বাংলাদেশের জনগণ হতাশ। আমরা পরস্পরের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধাশীল। আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি হবে সমতা, পরস্পরের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস এবং সম্মান প্রদর্শনের ওপর ভিত্তি করে। ’

এতে আরও লেখা রয়েছে, ‘সার্বভৌম কোনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের শামিল। ভারতের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহ বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অবজ্ঞাস্বরূপ বলে আমরা চাই, ভারত সরকার ভারতীয় মিডিয়া আউটলেটগুলোকে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মাধ্যমে ভারতীয় সংবিধানের ৫৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার আদর্শ প্রচার করতে পরামর্শ দেবে। ’

আরও পড়ুনঃ  তরুণীর সঙ্গে ৬ বছর ধরে প্রেম, বিয়ে করতে না চাওয়ায় প্রেমিকের কাণ্ড

‘আমরা আশা করি, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, অপতথ্য বন্ধ করতে ভারতীয় সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য দেশগুলোর মধ্যে একটি স্থিতিশীল, পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ অংশীদারত্ব অপরিহার্য। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জাতিসংঘ সনদের নীতির ওপর ভিত্তি করে সব সদস্যের সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে আমাদের দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ’

বিএনপির তিন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির। এই ছয় নেতার সই রয়েছে স্মারকলিপিতে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ