সম্প্রতি ইন্টারনেট মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। যেখানে পুলিশ সদস্যদের লাশের পাশে সহকর্মীদের অঝোরে কান্না করতে দেখা গেছে। ইন্টারনেটে ভিডিওটি প্রচারের পাশাপাশি দাবি করা হয়েছে, থানায় ঢুকে ওসিকে হত্যা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও এক্সে এমন দাবিতে একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপাতালের ভেতরে স্ট্রেচারের ওপর একজন পুলিশ সদস্যের লাশ ঢেকে রাখা হয়েছে। আর তার পাশেই কয়েকজন পুলিশ সদস্য অঝোরে কান্না করছেন।
তবে তথ্যের সত্যতা যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, বরং এটি ২০২৩ সালের একটি ভিডিও। এমনকি ইন্টারনেটে প্রচারিত ওই ভিডিওটি থানায় ঢুকে ওসিকে হত্যার ঘটনার নয়। বরং, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া এক পুলিশ সদস্যের লাশের পাশে সহকর্মীদের শোকের মুহূর্তে ধারণ করা ভিডিও।
এ নিয়ে অনুসন্ধানকালে সালাহউদ্দিন কাদের লাবলু (Salauddin Kader Lablo) নামের একটি ফেসবুক আইডিতে ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সেই পোস্টে থাকা ভিডিওটির সঙ্গে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।
অন্যদিকে ফেসবুক আইডিটিতে প্রকাশিত ওই ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সেটি ২০২৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ধারণ করা একটি ভিডিও। যেটি মূলত সড়ক দুর্ঘটনায় মো. মোমিনুল ইসলাম নামের এক পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যুর। বড় দরগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ওই পুলিশ সদস্যের লাশ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর সহকর্মীদের শোকের সেই ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
পরবর্তীকালে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে দেশের একটি গণমাধ্যমে ২০২৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ‘বাসচাপায় প্রাণ গেলো হাইওয়ে পুলিশ সদস্যের’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
অর্থাৎ, ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের কোনো ঘটনা নয় এবং সেটি থানায় ঢুকে ওসিকে হত্যারও কোনো ভিডিও নয়। সুতরাং, সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যুর পর তার সহকর্মীদের শোকের ভিডিওকে থানায় ঢুকে ওসিকে হত্যার ভিডিও দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।