ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তির মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানায় অবস্থান নিয়েছিলেন একদল ব্যক্তি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত তারা থানার সামনে রয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ভোরে শাহবাগ থানায় গিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কেউ কেউ ফরহাদের ছবিটি শেয়ার করে দাবি করেছেন, ফরহাদ সেখানে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষ হয়ে। তবে শাহবাগ থানা সূত্র জানায়, ফরহাদ পুলিশের ডাকে থানায় গিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে এ নিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন এস এম ফরহাদ। ওই পোস্টে তিনি বলেন, “শাহবাগ থানার ওসি রাত ১টার দিকে কল দিয়ে জানালেন, ‘থানার অবস্থা খুব একটা ভালো না, অপরাধীকে ছাড়িয়ে নিতে কিছু মানুষ থানার সামনে অবস্থান নিয়েছে এবং এই পরিস্থিতি বড় কোনো সংকট ও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
’ সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ভিক্টিম বোনটির সাথে যোগাযোগ করার নানা চেষ্টা করি। কিন্তু গভীর রাতে সবাই ঘুমিয়ে থাকাটা স্বাভাবিক ছিল, তাই কাউকেই কানেক্ট করতে পারিনি।”
ফরহাদ বলেন, ‘সাহরির সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বোনটির সঙ্গে বিস্তারিত কথা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রমনা জোনের ডিসি মাসুদ ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করে একমত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার অংশ হিসেবে থানায় যাই এবং সেখানে অবস্থানরত তৌহিদি জনতার দাবি ও অবস্থান জানার চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, “তাদের দাবি ছিল, ‘অর্ণবকে কোর্টে তোলা যাবে না, এখানেই মুক্তি দিতে হবে।
’ এটা শুধু স্বাভাবিক দাবির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; সেখানে অবস্থানরতরা একসঙ্গে হাতে হাত রেখে নিজেরা শপথও করে ফেলছেন- তারা জীবন গেলেও এখান থেকে সরবেন না। অবস্থা ক্রিটিকাল দেখে তাদের বোঝানোর বহু চেষ্টা করতে গিয়ে উল্টো একাধিকবার বাগবিতণ্ডার শিকারও হই। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সহকারী প্রক্টর স্যার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়কসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের প্রচেষ্টায় ওনাদের কর্মসূচি পরিবর্তনের ব্যাপারে দীর্ঘ সময় নানা অ্যাপ্রোচে রিকোয়েস্ট করা হয় এবং লিগ্যাল প্রসিডিউর মেইনটেইন করার ব্যাপারে ওনারাও কনভিন্সড হন।”
শিবির নেতা বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা ছিল, এই বিষয়কে কেন্দ্র করে ঠিক যতটুকু অপরাধীর শাস্তি কিংবা ভিক্টিম বোনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাবার কথা, সেটা না হয়ে বরং বড় কোনো অস্থিরতা বা সংকট তৈরি হতে পারে। এই সুযোগে নানা প্রান্তিক রাজনৈতিক গ্রুপ নিজেদের এজেন্ডা নিয়ে অহেতুক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
সব শেষে আমরা পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করে অর্ণবকে নিয়ে গাড়ি কোর্টে নেওয়ার নিশ্চয়তা নিয়ে ফিরি।’
তিনি আরো বলেন, ‘অর্ণবের অ্যাপ্রোচ ও শব্দচয়ন হ্যারাসমেন্টের অ্যাপ্রোচ, এটাকে জাস্টিফাই করবার সুযোগ নাই। অর্ণবের হাতে কুরআন দিয়ে বিজয়ী স্লোগান ও আপনার দ্বীনি ভূমিকা এই অঞ্চলের মুসলমানদের কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না; বরং বহু গুণ প্রশ্নবিদ্ধ করবে।